শেরপুর কারাগারে হামলা ও ভাঙচুরে
– ১২ হাজার আসামি করে মামলা
শেরপুর প্রতিনিধি:
শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা দাবির আন্দোলনের মধ্যে শেরপুর জেলা কারাগারে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনায় শেরপুর সদর থানায় মামলা করা হয়েছে।
গত ১১ আগস্ট জেলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার লিপি রানি সাহা বাদী হয়ে ১০-১২ হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) শেরপুর জেল সুপার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কারাগারে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করায় জেলা কারাগার মেরামত করতে প্রায় এক মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে জেলা গণপূর্ত বিভাগ। এতে কারাগারের বিভিন্ন মালামালসহ ৩ কোটি টাকার বেশি সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও ৯টি অস্ত্র লুট হয়েছে। যার মধ্যে ৫টি রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে।
কারাগার কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বিকেলে কয়েক হাজার মানুষ লাঠিসোঁটা, রামদা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কারাগারের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। তাঁরা বন্দিদের ওয়ার্ড ভেঙে তছনছ করে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষের হামলার মুখে কারারক্ষীরা অসহায় হয়ে পড়েন। এ সময় কারাগারের ৫১৮ জন বন্দি পালিয়ে যান। হামলাকারীরা কারাগারের ৯টি আগ্নেয়াস্ত্র, চায়নিজ রাইফেলের ৮৬৪টি গুলি, শটগানের ৩৩৬টি গুলি ও কারাবন্দীদের জন্য মজুত করা খাদ্যসামগ্রী, টাকা-পয়সা লুট করেন। সেই সঙ্গে কারাগারের প্রশাসনিক ভবনসহ মূল্যবান রেকর্ডপত্র, গাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন।
এ ব্যাপারে শেরপুর গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, শেরপুর জেলা কারাগার ভাঙচুরের পরে কারা কর্তৃপক্ষের অনুরোধে কারাগার সংস্কারের প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ১ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। এরমধ্যে কিছু কাজ দ্রুত করে দেওয়া হবে। আবার কিছু কাজ করতে সময় লাগবে। কয়েদিদের থাকার সেলগুলো আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করা সম্ভব। তবে প্রশাসনিক ভবন, কারারক্ষীদের ব্যারাক, কারাধ্যক্ষের বাসভবন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেগুলো সংস্কার করতে অন্তত ১৫ দিন সময় লাগবে
এ বিষয়ে শেরপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর খান বলেন, ঘটনার দিন ৫১৮ জন বন্দি পালিয়ে যায়। তবে বেশ কয়েকজন পালিয়ে যাওয়া বন্দি আত্মসমর্পণের জন্য যোগাযোগ করেছে। তবে কারাগারে তাদের থাকার ব্যবস্থা, খাবারের ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় তাদের অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।
তিনি জানান, কারাগার থেকে লুট হওয়া ৯টি আগ্নেয়াস্ত্রের ইতোমধ্যে ৫টি উদ্ধার হয়েছে। সেগুলো সেনাবাহিনীর হেফাজতে আছে।