ঠাকুরগাঁওয়ে টিসিবির পণ্য প্যাকেটজাত করণে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ শহিদুলের বিরুদ্ধে !
মোঃ মজিবর রহমান শেখ,
টিসিবির পণ্য প্যাকেটজাত করণে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে গত বুধবার (৬ মার্চ) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সোলেমান আলীর বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন ডিলাররা। অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম (৪২) জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক হিসেবে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে উচ্চ আদালতে মামলাও চলমান রয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূ্ত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় টিসিবি’র পণ্য বিক্রয়ের জন্য ৬১ জন ডিলার নিয়োগ আছেন। আর এই সব ডিলারদের মাধ্যমে ৯২ হাজার ৬৮৮ জন স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে সরকারের ভর্তুকি মূল্যে চাল, ডাল ও তেল বিক্রয় করা হয়। অভিযোগে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম ও মিন্টু দীর্ঘদিন ধরে পণ্য প্যাকেটজাত করণ বাবদ ১ টাকা এবং শ্রমিক মুজরী বাবদ ১ টাকা করে প্যাকেজ প্রতি ২ টাকা হারে ডিলারদের কাছে আদায় করে আসছেন। প্রতি বার ডিলারদের কাছ থেকে প্যাকেজিং ও শ্রমিকের মুজুরী বাবদ ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৭৬ টাকা আদায় করেন, যা নিয়ম বর্হিভূত এবং দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে এসব কাজ করেছেন। দিনাজপুর টিসিবির সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান স্বাক্ষরিত পত্রে জানা যায়, ভ্যাট ও আয়করের টাকা কর্তন করে প্যাকেজিং বাবদ প্রতি প্যাকেটের জন্য ২ টাকা ৬১ পয়সা হারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। মেসার্স স্বর্গ সমুদ্র টের্ডাসের সুব্রত সরকার, মেসার্স শিফা ট্রেডার্স’র সাইফুল ইসলাম, মেসার্স বিসমিল্লাহ এন্টাপ্রাইজ’র আনোয়ার হোসেন ও মেসার্স সাহেদী মুদি স্টোর’র রোকনুজ্জামান সাহেদী জানান, শহিদুলের নির্দেশে মিন্টু শ্রমিক খরচ ১ টাকা ও প্যাকেতজাত করণে ১ টাকা করে নিয়েছে। টাকা দিতে না চাইলে তারা চাপ দিতো। আটকে দেয়া হতো গাড়ি। পরবর্তিতে টাকা ফেরত চেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে একাধিক ব্যক্তি বলেন শহিদুল ইসলাম ইতিপূর্বে গ্রামের সহজ সরল মানুষের কাছে তথ্য গোপন করে জমি ক্রয় করেন। পরে সেই জমি সরকারি প্রকল্পে উচ্চমূল্যে বিক্রি করেন। এভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যান শহিদুল। হঠাৎ করেই তার এত সম্পদের মালিক হওয়ায় শহরজুড়ে চলে নানা আলোচনা আর সমালোচনা। ডিসি অফিসে তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারী নির্মাণ করছেন ছয় তলাবিশিষ্ট আলিশান বাড়ি। তার বিরুদ্ধে দূর্নীতি দমন কমিশন দুদকে মামলা চলমান রয়েছে। তবে টাকা নেয়ার বিষয়টি শহিদুল ইসলাম প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করে বলেন, টাকা আদায়ের বিষয়টি জেলা প্রশাসক অবগত আছেন। তবে সাত মাস নয় কয়েক মাস দায়িত্বে ছিলাম। আর একা এই কাজটি করেননি বলে দাবি তার।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সোলেমান আলী বলেন, টিসিবি পন্য প্যাকেটজাতে টাকা নেওয়ার কথা জানা ছিল না। যদি অফিসের কর্মচারি টাকা নেন তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোঃ মজিবর রহমান শেখ
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
০১৭১৭৫৯০৪৪৪