বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে আসে নানা পরিবর্তন। ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক, রুক্ষ ও নিস্তেজ। তবে কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার আছে, যা নিয়মিত খেলে বয়সজনিত প্রভাব অনেকটাই ধীর করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উচ্চ প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার বয়স ধরে রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন ১০টি পুষ্টিকর খাবার, যা আপনার ত্বক ও শরীরকে তরতাজা রাখতে সহায়ক:
১. এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল
বিশ্বের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর তেলগুলোর মধ্যে অন্যতম এটি। এতে রয়েছে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বকের বলিরেখা কমায়, প্রদাহ কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। সালাদ বা ডিপ হিসেবে খাওয়া যায়।
২. গ্রিন টি
পলিফেনলসমৃদ্ধ গ্রিন টি ফ্রি র্যাডিকেলসের বিরুদ্ধে কাজ করে, ত্বককে সুরক্ষিত রাখে এবং বয়সের ছাপ কমায়। প্রতিদিন ১-২ কাপ গ্রিন টি পান করা যেতে পারে।
৩. চর্বিযুক্ত মাছ
সালমন, টুনা, ম্যাকেরেল বা সার্ডিনের মতো মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যাসটাক্স্যানথিন, যা ত্বককে নমনীয় রাখে ও প্রদাহ কমায়। সপ্তাহে অন্তত দুবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
৪. ডার্ক চকলেট
৭০% বা তার বেশি কোকোযুক্ত ডার্ক চকলেটে আছে ফ্ল্যাভানল, যা ত্বকের রক্তসঞ্চালন বাড়ায় ও সূর্যরশ্মির ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়তা করে। তবে চিনি কম এমন চকলেট বেছে নেওয়াই ভালো।
৫. রঙিন সবজি
গাজর, ব্রোকলি, পালং শাক, ক্যাপসিকামের মতো সবজিতে আছে বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি, যা ত্বককে উজ্জ্বল রাখে ও কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে। প্রতিদিন অন্তত ৫ ধরনের সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৬. ফ্ল্যাক্সসিড
এই বীজে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ওমেগা-৩, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং বলিরেখা কমায়। সকালে ওটমিল বা দইয়ের সঙ্গে গুঁড়া করে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
৭. ডালিম
ডালিমে থাকা ফ্ল্যাভোনল ও ট্যানিন ত্বকের কোলাজেন রক্ষা করে এবং নতুন কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে। ফলে ত্বক দীর্ঘসময় টানটান থাকে।
৮. অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোতে আছে স্বাস্থ্যকর চর্বি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং বার্ধক্যের প্রভাব হ্রাস করে। সালাদে বা ব্রেডে মাখিয়ে খাওয়া যায়।
৯. টমেটো
লাইকোপিন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর টমেটো সূর্যরশ্মির ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। রান্না করা টমেটো বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে খেলে লাইকোপিন আরও ভালোভাবে শোষিত হয়।
১০. কোলাজেন পেপটাইড
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের কোলাজেন উৎপাদন কমে যায়। কোলাজেন পেপটাইড সাপ্লিমেন্ট অথবা মাছ, ডিম, মাংসের মতো প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের মাধ্যমে ত্বকের দৃঢ়তা ও আর্দ্রতা বজায় রাখা সম্ভব।
বয়স রোধের কোনো জাদুকরী উপায় নেই। তবে সঠিক ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুললে শরীর ও ত্বকের বয়সের ছাপ অনেকটাই ধীরে আসে। তাই আজ থেকেই শুরু করুন স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে দিন, সৌন্দর্য আর স্বাস্থ্যের জন্য ওষুধ নয়—খাদ্যই হোক প্রধান সহায়ক।