বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ০৪:০০ পূর্বাহ্ন

তিন সন্তা/নের ঘরে ঠাঁ/ই হয়নি বৃ/দ্ধা মায়ের, এগি/য়ে এলো সোনা/বহিনী..

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫
  • ১৪ বার পঠিত হয়েছে
অসহায় বৃদ্ধাকে পানি পান করাচ্ছেন সেনাসদস্য। ছবি : Max tv bd

গর্ভের তিন সন্তানের ঘরে ঠাঁই হয়নি ৯০ বছর বয়সী শ্রীমতী বিমলা রানীর। কখনো বাড়ির এক কোণে, আবার কখনো বাড়ির পাশে বাঁশ ঝাড়ের নিচে। দু’বেলা পেটপুরে খাবার জোটে না কোনো ছেলের ঘরেই।

বিমলা রানীর বগুড়া সদর উপজেলা বড়কুমিড়া হিন্দুপাড়া এলাকার হরিপদ চন্দ্রের স্ত্রী। বিমলার তিন ছেলের মধ্যে দুজন কাঠমিস্ত্রি ও আরেকজন দর্জির কাজ করেন।

মা হয়েও নিরাপদ আশ্রয়টুকুও পাননি নিজ সন্তানদের কাছে। এমন হতভাগা মা বিমলা রানী। ৯০ বছর বয়সী বিমলা রানী এখন বয়সের ভারে নুয়ে পড়ছেন। চোখে দেখেন না, কানে শোনেন স্বাভাবিকের চেয়ে কম। ঠিকভাবে চলাফেরা করতেও পারেন না।

এক সময় স্বামী-সন্তান নিয়ে বেশ সুখেই ছিলেন বিমলা রানী। স্বামী হরিপদ চন্দ্র মারা যাবার পর থেকেই সুখের সংসারে বিপর্যয় নামে বিমলা রানীর। ৩ ছেলের কেউই বৃদ্ধা মাকে দেখেন না।

দেখাশোনা করার ভয়ে তারা প্রতিদিন সকালে ছেলেরা মাকে রেখে আসেন বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে। বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা পেরোলেও অসহায় বিমলার কপালে জোটে না খাবার। সর্বশেষ সোমবার রাতে মা বিমলাকে মেজো ছেলে লব সরকার তার বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে স্থানীয়দের চাপে মাকে বাড়িতে নিয়ে গেলেও মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে আবারও মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন তিনি৷ ঘড়ির কাঁটা পেরিয়ে বিকেল ৪টা, অথচ এক ফোঁটা পানিও জোটেনি বিমলার কপালে। খা খা রোদে পড়ে থেকে জীবন প্রায় যায় যায় অবস্থা।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকেলে স্থানীয়দের মাধ্যমে এমন অভিযোগ পেয়ে বগুড়া সদরের বড় কুমিড়া হিন্দুপাড়ার ঘটনাস্থলে যায় সেনাবাহিনীর একটি দল। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিকভাবে বৃদ্ধাকে কিছু খাবার কিনে দেওয়া হয়। পরে তুলে দেওয়া হয় ছেলেদের ঘরে।

অভিযোগের সত্যতা পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এক সেনা কর্মকর্তা। পরে ভুল স্বীকার করে বিমলাকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।

এ সময় লেফটেন্যান্ট ফাহাদ বৃদ্ধা বিমলা রানীর ছেলেদের সতর্ক করেন এবং বৃদ্ধা বিমলাকে নিজে হাতে খাবার খাওয়ান। এ ঘটনায় প্রতিবেশীরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান আর বৃদ্ধার ছেলেদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তুলে ধরেন।

সেনাবাহিনীর সদর ক্যাম্পের লেফটেন্যান্ট আল ফাহাদ বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। তার ছেলেরা ভুল স্বীকার করেছেন। তাদের আর্থিক সমস্যা থাকলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সহযোগিতাও করা হবে।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর