নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের নাম ব্যবহার করে চাঁদা দাবি ও হুমকি দেওয়ার একটি অডিও কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তবে চাঁদা দাবি করা ফোনালাপের ব্যক্তিটি জাকির খানের নয় বলে জানিয়েছেন জাকির খানের পক্ষের আইনজীবী রাজিব মণ্ডল।
সম্প্রতি এ ঘটনায় এক মিনিট ১৫ সেকেন্ডের একটি অডিও কল রেকর্ড ভাইরাল হয়।
কল রেকর্ডে নারাণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান পরিচয় দিয়ে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে এক অজ্ঞাত ব্যবসায়ীকে ফোন করে বলেন, ‘৫ মিনিটের মধ্যে তুই আমার বাসায় না এলে আমার পোলাপান তোর বাসায় যাবে। তুই চ্যালেঞ্জ করছস না আমার সঙ্গে। তোকে দেখি ওরা বাঁচাইতে পারে কিনা। তোকে আমি দেখতেছি। তুই ৫ মিনিটের মধ্যে আয়, তোর টাকা লাগবে না। তারপর দেখ তোকে কী করি। তুই মনে করছস কে বা কারা ফোন দিছে। আমি তোকে দেখতেছি।’
এর প্রতি উত্তরে ফোনের ওপাশে থাকা অজ্ঞাত ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমার জাকির ভাই ২০ হাজার টাকা নেওয়ার লোক না। চাষাঢ়ায় তো অনেক জ্যাম, আমার আসতে সময় লাগবে। আমি একটু পরে আসতেছি।’
এদিকে এ ঘটনায় বুধবার (৪ জুন) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারের কাছে লিখিত অভিযোগপত্র দিয়ে সাক্ষাৎ করেছেন আইনজীবী রাজিব মণ্ডলসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির আইনজীবীরা।
জাকির খানের পক্ষে জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী রাজীব মণ্ডল লিখিত অভিযোগে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এবং বিএনপি নেতা জাকির খানের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা ও দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনটি ফোন নম্বর থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা বিভিন্ন গার্মেন্টস ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, উল্লেখিত অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ওই ফোন নম্বর থেকে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের নাম ব্যবহার করে চাষাঢ়া এলাকার একজন গার্মেন্টস মালিকসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে চাঁদা দাবি করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে আসছে। এরূপ একটি ফোনালাপের অডিও কল রেকর্ড ভাইরাল করে এই নেতার ও বিএনপি দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে ঘৃণ্য কাজ করছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় অজ্ঞাত নম্বরের অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জাকির খানের পক্ষের আইনজীবী রাজিব মণ্ডল বলেন, ভাইরাল হওয়া অডিও কল রেকর্ডের ব্যক্তিটি জাকির খান নয়। কে বা কারা তার সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য এ ধরনের কাজ করছে। এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির বলেন, বিগত সময়ে জাকির খানের বিপক্ষে একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দি রেখেছিলেন। সেই গ্রুপটি ফের সোচ্চার হয়ে তাকে বিপদে ফেলার পাঁয়তারা করছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, এ বিষয় নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।