সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩৯ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার থেকে ড. আফিয়া সিদ্দিকী মুক্তি পাননি..

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৫৬ বার পঠিত হয়েছে
অপহরণ ও গ্রেপ্তার হওয়ার আগের ছবি। ছবি : সংগৃহীত

গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে বন্দী রয়েছেন পাকিস্তানের স্নায়ুবিজ্ঞানী ড. আফিয়া সিদ্দিকী। সম্প্রতি তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। তবে এ ঘটনা সঠিক নয় বলে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) জানিয়েছে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. আফিয়া সিদ্দিকী মুক্তি পাওয়ার দাবিটি সঠিক নয় এবং প্রচারিত ছবিগুলো যুদ্ধবিরতি কার্যকর-পরবর্তী সময়ে ফিলিস্তিনের মুক্তি পাওয়া বন্দিদের। প্রকৃতপক্ষে, আফিয়ার আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে আফিয়ার ক্ষমা প্রার্থনার অনুরোধ করলেও বাইডেনের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। ফলে তিনি এখনো কারাগারেই বন্দি রয়েছেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ড. আফিয়া সিদ্দিকী মুক্তি পেয়েছেন শীর্ষক দাবিটির সপক্ষে গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে গত ১৮ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম স্কাই নিউজে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আফিয়া সিদ্দিকীর আইনজীবী বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে একটি ডসিয়ার বা দলিলগুচ্ছ জমা দিয়েছেন। তিনি আশা করেছেন আফিয়াকে ক্ষমা করবেন, কারণ তার মতে, এটি একটি স্পষ্ট ন্যায়বিচারের ভুল। এ জন্য বাইডেনের হাতে সময় ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগ পর্যন্ত তথা ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত। স্কাই নিউজের ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি বাইডেন ৩৯টি ক্ষমা মঞ্জুর করেছেন এবং ৩ হাজার ৯৮৯টি শাস্তি কমিয়েছেন। কিন্তু আফিয়া সিদ্দিকীকে ক্ষমা করার বিষয়ে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ড. আফিয়া সিদ্দিকীর আইনজীবী ক্লিভ স্ট্যাফোর্ড স্মিথের এক্স অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, গতকাল ২০ জানুয়ারি তিনি একটি পোস্ট করে জানিয়েছেন, ড. আফিয়া সিদ্দিকীকে ক্ষমা প্রদর্শনে মানা করেছেন জো বাইডেন। অর্থাৎ ড. আফিয়া সিদ্দিকীকে ক্ষমা করেননি বাইডেন।

এর কয়েক ঘণ্টা পর আজ (২১ জানুয়ারি) প্রথম প্রহরে তিনি তার এক্স অ্যাকাউন্টে একটি স্ক্রিনশটসহ আরেকটি পোস্ট করে জানান, ‘অযোগ্য এবং অমানবিক : তারা কিছুই সঠিকভাবে করতে পারে না : বাইডেনের ওয়েবসাইটে এখনো বলা হচ্ছে আফিয়ার ক্ষমা আবেদন অপেক্ষমাণ (Pending) এবং তারা যে ঠিকানায় (ড. আফিয়া সিদ্দিকীকে ক্ষমা করার) অস্বীকার পত্র পাঠিয়েছে, তা আমি কখনোই দিইনি, ওই ঠিকানা আমি চার বছর আগে ছেড়ে দিয়েছিলাম…’

তবে পরবর্তী সময়ে রিউমর স্ক্যানার যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের অফিস অব দ্য পার্ডন অ্যাটোর্নির ওয়েবসাইটে ড. আফিয়া সিদ্দিকীর ক্ষমা প্রদর্শনের আবেদনের কেস নম্বর দিয়ে অনুসন্ধান করে দেখে যে স্ট্যাটাসটি গতকাল সোমবারের (২০ জানুয়ারি) তথ্য অনুযায়ী হালনাগাদ করা হয়েছে এবং ক্ষমাপ্রার্থনার আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তি পাওয়ার দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই-এর ওয়েবসাইটে ২০ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনে ওই আলোচিত ছবিগুলোর একটির সংযুক্তি পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে ছবিটি সম্পর্কে বলা হয়, ছবিটি গাজায় যুদ্ধবিরতির পর মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দির। একই তথ্য আরও একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রেও জানা যায়। এ ছাড়া জানা যায়, ওই বন্দি ২০ জানুয়ারি প্রথম প্রহরে মুক্তি পেয়ে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করছেন।

ড. আফিয়া সিদ্দিকীর ছবি দাবিতে প্রচারিত অপর ছবিটি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ওয়েবসাইটে ২০ জানুয়ারির রয়টার্সের দিনসেরা ছবিগুলোর তালিকায় পাওয়া যায়। ছবিটি সম্পর্কে বলা হয়, গাজা সংকট এবং হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া এক ফিলিস্তিনি বন্দিকে রামাল্লায় ইসরায়েলি দখলকৃত পশ্চিম তীরে স্বাগত জানানো হয়।

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিগুলোও ড. আফিয়া সিদ্দিকীর নয় এবং তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর