শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩০ অপরাহ্ন

গবেষণায় লাখ লাখ প্লাস্টিকের কণা মিলল পানির বোতলে..

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২৮ বার পঠিত হয়েছে
ছবি : সংগৃহীত

তৃষ্ণা পেলেই আগ-পাছ কিছু না ভেবেই আমরা মুখে প্লাস্টিকের বোতল লাগিয়ে ঢক ঢক করে পানি পান করি। কিন্তু এই এক বোতল পানিতেই যে কত প্লাস্টিকের কণা রয়েছে তা আমরা বুঝতেও পারি না। প্লাস্টিকের বোতলে পানি পান করলে কী ক্ষতি হতে পারে, এক গবেষণায় এ নিয়ে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গবেষণা ফলটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে।

নতুন এই গবেষণায় বোতলজাত পানিতে লাখ লাখ ন্যানোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অথচ কিছু দিন আগেও এমন তথ্য তাদের কাছে অজানা ছিল। পানির বোতলে থাকা এই ন্যানোপ্লাস্টিক এতটাই ছোট যে মাইক্রোস্কোপেও এই কণার উপস্থিতি ধরা পড়ে না।

গবেষকরা বলছেন, এক লিটার পানিতে সাত ধরনের প্লাস্টিকের গড়পড়তা ২ লাখ ৪০ হাজার প্লাস্টিক কণা থাকে। যেগুলোর ৯০ শতাংশই ন্যানোপ্লাস্টিক। মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই ন্যানোপ্লাস্টিক খুব সহজেই পরিপাকতন্ত্র বা ফুসফুসের টিস্যু ভেদ করে রক্তে ঢুকে পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে রক্তের মাধ্যমে পুরো শরীর ও কোষে ছড়িয়ে পড়তে পারে সম্ভাব্য ক্ষতিকর এই সিনথেটিক কেমিক্যাল।

২০১৮ সালে এক গবেষণায় প্রথমবারের মতো বোতলজাত পানির ৯৩ শতাংশ নমুনায় মাইক্রো ও ন্যানোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি খুঁজে পান বিজ্ঞানীরা। ৯ দেশের ১১টি ভিন্ন ভিন্ন পানির ব্র্যান্ডের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। পূর্ববতী গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, প্রতি লিটার দূষিত পানিতে গড়ে ১০টি প্লাস্টিকের কণা রয়েছে, যা মানুষের চুলের চেয়েও প্রশস্ত।

এর বাইরেও ছোট ছোট ৩০০ কণা পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু এই কণা বিশ্লেষণ করা বা পানিতে আরও কণা আছে কিনা তা জানার কোনো উপায় ছিল না। তবে এবার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্লাস্টিকের বোতলের পানিতে ন্যানোপ্লাস্টিক খুঁজে পেয়েছেন।

নতুন এই গবেষণার ফল ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে প্রকাশিত হয়। গবেষকরা বোতলজাত পানিতে ন্যানোপ্লাস্টিকের পরিমাণ ও রাসায়নিক কাঠামো বিশ্লেষণ করেছেন। তাতে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া জনপ্রিয় তিনটি ব্র্যান্ডের বোতলজাত পানিতে ১ লাখ ১০ হাজার থেকে ৩ লাখ ৭০ হাজার পর্যন্ত প্লাস্টিক বিট রয়েছে।

এই ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র কণা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের টিস্যু ভেদ করে অনায়েসে শরীরের ভেতর ঢুকে যেতে পারে। এতে প্লাস্টিকের রাসায়নিক লিভার, কিডনি ও ব্রেন এমনকি গর্ভের শিশুর শরীরে প্রবেশ করতে পারে। অন্তঃসত্ত্বা ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে এমন প্রমাণও পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

এই সমস্যা থেকে বাঁচতে বিজ্ঞানীরা যতটা সম্ভব প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষ করে প্লাস্টিকের কন্টেইনারে খাবার বা বেভারেজ খাওয়া পরিহার করতে হবে। এর পরিবর্তে কাঁচের গ্লাস বা স্টেইনলেস স্টিলের তৈজসপত্র ব্যবহার করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর