পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে মো. আরমান হোসেন হৃদয় চতুর্থ। পড়ে গ্রামের মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণিতে। ফেসবুকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দেখে পরিবারকে না জানিয়ে চলে যায় ঢাকায়। আন্দোলনে যোগ দিয়ে পুলিশের গুলিতে আহত হয়। প্রথমে ঘরের গরু বিক্রি করে চিকিৎসা চালিয়েছেন। এখন তাও শেষ, বর্তমানে টাকার অভাবে চলছে না তার চিকিৎসা।
আরমান হোসেন হৃদয় (১৬) নোয়াখালী সদর উপজেলার এওজবালিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের শান্তসীতা গ্রামের আক্কেল আলী মাঝি বাড়ির মো. আনাল হক ও রোকেয়া বেগমের ছেলে। আরমান স্থানীয় নন্দনপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
আরমান হোসেন রিদয় বলেন, আমার শরীরে তিনটা গুলি লেগেছে। দুইটা বুকে আর একটা মাথায়। বুকের গুলির স্থানে ব্যথা না লাগলেও মাথার গুলির স্থানে ব্যথা করে। পরীক্ষার খাতায় লিখতে গেলে আবার মাথায় ব্যথা অনুভব করি। থেমে থেমে লিখতে হয়। কোনো কাজ করতে পারি না। মাথা টনটন করে।
আরমানের শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, আরমান ও তার ছোট বোন আমাদের মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। বেশ কয়েকদিন আরমান মাদ্রাসায় অনুপস্থিত ছিল। আরমানের বোনকে জিজ্ঞেস করলে সে তার ভাইয়ের সম্পর্কে কিছু বলত না। আমরা খবর নিয়ে জানতে পারি আরমান গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ঘরের গরু বিক্রির টাকায় চিকিৎসা নিয়েছে। তার বাবা বিভিন্নভাবে কষ্টে আছে। আরমানের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ালে তার চিকিৎসা শেষ করা যেত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হাসিব আহমেদ বলেন, আরমান সাহসী ছেলে। সেদিন সাহস নিয়ে এগিয়ে গিয়েছে। তবে তার চিকিৎসার জন্য ঘরের গরু বিক্রি করতে হয়েছে, এটা খুবই কষ্টদায়ক। তার জন্য কী করা যায়, তা অন্যদের সঙ্গে আমরা আলাপ করব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এবিষয়ে সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আখিনূর জাহান নীলা বলেন, আমার কাছে বিষয়টা জানা ছিল না। জানতে পারলে সহযোগিতা করতাম। তবে এখনো তাকে সহযোগিতা করার সুযোগ রয়েছে। তার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হতে হবে। তারপর ভেরিফাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। তার চিকিৎসাসহ সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।