একটি অত্যাধুনিক জ্বালানি তেল চোরাচালান নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে ইরান ও তার প্রক্সি বাহিনী বছরে প্রায় ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার আয় করে। বিশেষজ্ঞরা এমনটাই ধারনা করেছেন। বিশেষ করে ২০২২ সালে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোহাম্মদ শিয়া আল সুদানি দায়িত্ব নেয়ার পর এই কার্যক্রম আরও বেড়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পাঁচটি সূত্র বার্তা সংস্থ রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।
এ কাজের সঙ্গে ইরাক, ইরান এবং উপসাগরীয় দেশগুলো জড়িত। এছাড়া এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে সরকারি নীতিও কাজে লাগিয়েছে ইরাক। যেখানে ভর্তুকি মূল্যে অ্যাসফল্ট প্ল্যান্ট গুলোতে জ্বালানি তেল পাঠানো হয়। ওই পাঁচটি সূত্র এবং পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থার তিনটি প্রতিবেদেন এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর মধ্যে দুটি প্রতিবেদনে চলতি বছরের আগস্টে প্রকাশ করা হয় অন্যটি এখনও অপ্রকাশিত।
এই প্রক্রিয়ায় অধীনে প্রতি মাসে ৫ লাখ ৭ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ভারী জ্বালানি তেল উৎপাদন করা হয়। যার মধ্যে উচ্চ সালফার জ্বালানি তেলও রয়েছে। আর এসব তেলের বেশির ভাগ এশিয়াতে রপ্তানি করা হয়। দুটি সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
সুদানি ক্ষমতায় আসার পর জ্বালানি তেলের চোরাচালান ব্যাপক হারে বেড়েছে। এ ধরনের অবৈধ বাণিজ্য ইরাকে এর আগে কখনও দেখা যায়নি। তবে ইরাক এবং ইরানের কর্তৃপক্ষ রয়টার্সের অনুসন্ধানি প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
পার্শ্ববর্তী দেশ ইরাককে অর্থনৈতিক ফুসফুস হিসেবে বিবেচনা করে ইরান ও তার মিত্ররা। দেশটিতে ইরানের ব্যাপক আধিপত্য রয়েছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামরিক খাতে। শুধু তাই নয় ইরাকের ব্যাংকিং সুবিধাকেও কাজে লাগাচ্ছে ইরান। এর মাধ্যমে ইরান মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করতে পারছে। ইরাকি এবং মার্কিন কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
বছরের পর বছর ধরে ইরাক ওয়াশিংটন এবং ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে সূক্ষ্মভাবে ভারসাম্য ধরে রেখেছে। এ অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে যদি কোনো শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাহলে তা সামাল দেয়ার জন্য কাজ করবে ইরাক।
বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ার কারণে নাম না প্রকাশের শর্তে ওই পাঁচটি সূত্র জানিয়েছে, ইরাক থেকে জ্বালানি তেল সরবরাহ করার দুটি প্রধান রুট রয়েছে। আর এর মাধ্যমে দেশটি ইরানের জ্বালানি খাতের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে তেল রপ্তানিতে সহযোগিতা করে।