লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ বর্তমানে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার জন্য যোদ্ধা পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা করছে না। সোমবার (০২ ডিসেম্বর) ইরানপন্থী গোষ্ঠীটির অভ্যন্তরীণ চিন্তাধারার সঙ্গে পরিচিত তিনটি সূত্র রয়টার্সকে বিষয়টি জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের একটি জোট হঠাৎ করে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আক্রমণ চালায় এবং আলেপ্পো ও ইদলিব প্রদেশের সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো দখল করে নেয়। এর ফলে আলেপ্পো শহর থেকে সরকারি বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়, যা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোর সবচেয়ে বড় বিপর্যয়।
সোমবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেন, সিরিয়ার সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করার সক্ষমতা রাখে। তবে তিনি এ-ও বলেন, প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো সহায়তা করবে। ইরানও প্রয়োজনীয় যেকোনো সহায়তা প্রদান করবে।
সূত্রগুলো রয়টার্সকে জানায়, হিজবুল্লাহকে এখনো এই যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করতে বলা হয়নি। গোষ্ঠীটি এই পর্যায়ে সিরিয়ায় যোদ্ধা পাঠানোর জন্য প্রস্তুত নয়। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সংঘর্ষ, বিশেষ করে দক্ষিণ লেবাননে দুই মাসের ভারী স্থল যুদ্ধের পর গোষ্ঠীটি এখনো পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
হিজবুল্লাহ রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া দেয়নি।
ওই কর্মকর্তা জানান, সিরিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ইরানি সামরিক কর্মীদের মোতায়েনের বিষয়ে কোনো অনুরোধ করা হয়নি।
হিজবুল্লাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তেহরানের ঘনিষ্ঠ একজন আঞ্চলিক কর্মকর্তা বলেন, তেহরান হিজবুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করছে। না, সিরিয়ার সরকার থেকে এমন কোনো অনুরোধ এখনো আসেনি।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহর প্রায় ৪ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি বিমান হামলা সিরিয়ায় হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তু করছে। ২০১৩ সাল থেকে ইরান ও রাশিয়ার সঙ্গে মিলিত হয়ে হিজবুল্লাহ আসাদ বাহিনীকে বেদখল হওয়া ভূমি পুনর্দখলে সহায়তা করেছে।
সূত্রগুলো জানায়, গোষ্ঠীটি আলেপ্পোর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র অফিসারদের সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে সরিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্থল যুদ্ধে মোতায়েন করেছে। আরও দুটি সূত্র জানিয়েছে, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সীমান্ত বরাবর লড়াই তীব্র হওয়ার পর হিজবুল্লাহ সিরিয়া থেকে তাদের বাহিনী ফিরিয়ে নিয়েছে।