ঠাকুরগাঁওয়ে গ্রীষ্মকালে ফাল্গুনের ছোঁয়া মুকুল ভরে গেছে আমের বাগানগুলো ।
মোঃ মজিবর রহমান শেখ,
ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলা সহ ৫টি উপজেলার পাতাঝরা ষড়ঋতুর রাজা বসন্ত। আবহমান বাংলার সৌন্দর্যের রাজা বলে, পরিচিতি গ্রীষ্মকাল। ফাগুনের ছোঁয়ায় পলাশ-শিমুলের বনে লেগেছে আগুন রাঙা ফুলের মেলা। শীতের জড়তা কাটিয়ে কোকিলের সেই সুমধুর কহু ডাকে মাতাল করতে আবারও ফিরে এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। রঙিন-বন, গাছে গাছে নতুন কুড়ি গজিয়েছে ফুলের সমারোহে, প্রকৃতি যেমন সেজেছে বর্ণিল সাজে, তেমনি নতুন সাজে সেজেছে আম গাছগুলোও। আমের মুকুলে ভরপুর আর মৌ মৌ ঘ্রাণে জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমন। শোভা ছড়াচ্ছে নিজস্ব মহিমায়। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে বাগানগুলো। ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী, রানীশংকৈল, হরিপুর, ঠাকুরগাঁও সদর, পীরগঞ্জ উপজেলার বাগান মালিক ও আম চাষিরা আশা করছেন বড় ধরনের কোন প্রাকৃতির দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে। আমচাষি ও বাগান মালিকরা বাগানে পরিচর্চা নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। অবশ্য গাছে মুকুল আশার আগে থেকেই গাছের পরিচর্চা করে আসছেন তারা। যাতে করে গাছে মুকুল বা গুটি বাঁধার সময় কোন সমস্যার সৃষ্টি না হয়। সারিবদ্ধ গাছে ভরপুর আমের মুকুল যেন শোভা ছড়াচ্ছে তার নিজস্ব মহিমায়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় হাড়ীভাঙ্গা, ফজলী, খিড়সাপাতি, আমরুপালী, মোহনা, রাজভোগ, রূপালী, গোপালভোগ সহ অন্যান্য জাতের আম চাষ করছে অনেক চাষী। আম চাষে সফল কৃষক ভাকুড়া গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন শুভ জানান, পুরোপুরিভাবে ৯০ ভাগ গাছে মুকুল এসেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই সকল গাছেই মুকুল আসবে। গতবারে আম বিক্রি করে অনেক টাকা আয় করেছি। তার মতো পীরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর, র্দুগাপুর, ভাকুড়া, চাপোড়, মছলন্দপুর, ভোমরাদহ, জাবরহাট, বৈরচুনা, হাজীপুর, সৈদয়পুর, কোষারাণীগঞ্জ গ্রামের অনেকেই আমের বাগান তৈরি করেছেন। তারা জানান, ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ কম থাকায় এবার কাঙ্খিত ফলনের আশা করছেন। সুবিধাভোগীদের সুফল দেখে চাষিরা আম চাষে উৎসাহিত হয়ে নিজ নিজ উদ্যোগে নতুন নতুন বাগান সৃজন করছেন। ধীরে ধীরে এ উপজেলা জুড়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে আমের বাগান। মানসম্মত আম উৎপাদিত হওয়ায় চাহিদাও বেড়েছে অনেক। এ বিষয়ে
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আতাউর রহমান জানান, এবং পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার আবুল কালাম আজাদ জানান, পীরগঞ্জ উপজেলার আবহাওয়া ও মাটি আম চাষের জন্য উপযোগী। মাঠ পর্যায়ের বাগান ও বসতবাড়ির চতুরপাশ ছাড়াও দন্ডায়মান আম গাছে মুকুল থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত গাছের আম যাতে কোন কারণে বিনষ্ট না হয় সে জন্য সার্বক্ষণিক সর্তক দৃষ্টি রয়েছে এবং কৃষকদের বহুমুখী পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক বেশি আমের উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোঃ মজিবর রহমান শেখ
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
০১৭১৭৫৯০৪৪৪