ভারত-পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি হামলা নিয়ে সুখবর দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
শনিবার (১০ মে) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘সাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও অসাধারণ বিচক্ষণতার পরিচয় দেওয়ার জন্য উভয় দেশকে আমি অভিনন্দন জানাই। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ!’
এর আগে পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর জবাব দিতে ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’ শুরু করেছে। গত শুক্রবার রাতে ভারত নিজেই পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি হামলা চালায়। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটি, সরকোটের রফিকি ঘাঁটি ও চকওয়ালের মোরাইদ ঘাঁটি এই হামলার লক্ষ্য ছিল। ভারতীয় হামলার পরপরই পাকিস্তান তার পাল্টা প্রতিক্রিয়া শুরু করে।
পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের গুরুত্বপূর্ণ নূর খান ঘাঁটিতে চালানো ভারতীয় মিসাইল হামলা প্রতিহত করা হয়েছে। যদিও স্থানীয় সময় রাত আড়াইটার দিকে রাওয়ালপিন্ডি ও ইসলামাবাদ এলাকায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এরপরই পাকিস্তান চালায় তাদের ‘বুনিয়ান-উন-মারসুস’ অভিযান।
গত ৭ মে বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত পাকিস্তানের ৬টি এলাকায় ২৪টি বেসামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য অস্ত্রে হামলা চালায়। এসব হামলা পাঞ্জাব প্রদেশের ভাওয়ালপুরের আহমেদপুর শারকিয়া, মুরিদকে, শিয়ালকোট, শকরগড় এবং পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের কোটলি ও মুজাফফরাবাদে হয়।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, বাহাওয়ালপুরের আহমেদপুর পূর্বাঞ্চলে ১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছে দুই-তিন বছর বয়সী একটি শিশু মেয়ে, সাতজন নারী ও চারজন পুরুষ। আহতদের মধ্যে রয়েছেন ৯ নারী ও ২৮ পুরুষ।
মুজাফফরাবাদের কাছে বিলাল মসজিদে চালানো হামলায় তিনজন নিহত হন, আহত হন এক মেয়ে ও এক ছেলে। কোটলির আব্বাস মসজিদে হামলায় নিহত হন ১৬ বছর বয়সী এক মেয়ে ও ১৮ বছর বয়সী এক ছেলে, আহত হন এক মা ও তার মেয়ে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের হামলার পর পাঞ্জাব প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতাল ও অন্যান্য জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ।
এদিকে পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের পাল্টা হামলায় ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ও একটি যুদ্ধ ড্রোন ভূপাতিত হয়েছে। আইএসপিআরের ডিজি বলেন, শত্রুর আগ্রাসনের জবাবে প্রতিরক্ষামূলকভাবে আমরা ৩টি রাফায়েল জেট, একটি মিগ-২৯, একটি এসইউ বিমান এবং একটি হেরন যুদ্ধ ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছি।