সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৪ অপরাহ্ন

২২ ঘ/ণ্টা/র পা/হা/ড়ি পথ পে/রিয়ে পেহেল/গামে হামলা..

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৮ বার পঠিত হয়েছে
হামলার পর ভারতীয় সেনারা পাহাড়ের পাথুরে পথ ও জঙ্গল পেরিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালায়। ছবি : সংগৃহীত

পাহাড়, জঙ্গল ও পাথুরে পথ—এই কঠিন ভূপ্রকৃতি পেরিয়ে ২২ ঘণ্টার দীর্ঘপথে হেঁটে কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ এক হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা।

তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য—পেহেলগামের বাইসারান উপত্যকায় চালানো সন্ত্রাসী হামলার আগে কোকেরনাগের গভীর জঙ্গল থেকে পায়ে হেঁটে এসেছিল চার জঙ্গি। তাদের লক্ষ্য ছিল স্পষ্ট : পর্যটকে ভরা উপত্যকাকে রক্তাক্ত করা।

রোববার (২৭ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মীরে ২২ এপ্রিল ঘটে যাওয়া এই হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন। সূত্রের খবর, হামলার সময় জঙ্গিরা ছিনিয়ে নিয়েছিল দুটি মোবাইল—একটি স্থানীয় বাসিন্দার, অন্যটি এক পর্যটকের। হামলায় অংশ নিয়েছিল মোট চার জঙ্গি—তিনজন পাকিস্তানি এবং একজন কাশ্মীরি, যার নাম আদিল ঠোকার।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে হিজবুল মুজাহিদিনে যোগ দিয়েছিল আদিল। পরে বৈধ পাসপোর্টে পাকিস্তানে গিয়ে লস্কর-ই-তৈয়বার ট্রেনিং ক্যাম্পে অংশ নেয় সে। যুদ্ধ অভিজ্ঞতা অর্জনের পর ২০২৪ সালে ফের কাশ্মীরে ফিরে আসে আদিল এবং সেখান থেকেই শুরু হয় তার নতুন অধ্যায়—পাকিস্তানি জঙ্গিদের গাইড হিসেবে কাজ করা।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই চারজনের দলে আদিলই ছিল স্থানীয় পথঘাটে অভিজ্ঞ। তার সহায়তাতেই বাকি তিনজন কঠিন পাহাড়ি পথ পেরিয়ে পৌঁছে যায় বাইসারানে।

ঘটনার দিন, স্থানীয় দোকানের পেছন থেকে বেরিয়ে আসে দুই জঙ্গি। তারা কিছু নিরীহ পর্যটককে কালেমা পড়তে বলে, এরপর একে একে চারজনকে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। এ দৃশ্য মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক, পর্যটকরা দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন। ঠিক সেই সময়, জিপলাইন এলাকার দিক থেকে অন্য দুই জঙ্গি গুলি চালাতে শুরু করে।

ফরেনসিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, হামলায় ব্যবহৃত হয়েছে একে-৪৭ ও এম৪ রাইফেল। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া গুলির খোসা এই তথ্যের প্রমাণ দিচ্ছে।

হামলার সময় একটি গাছের ওপর অবস্থান করছিলেন এক স্থানীয় আলোকচিত্রী। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও তিনি তার ক্যামেরায় বন্দি করেন হামলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। বর্তমানে তার ধারণকৃত ভিডিওই তদন্তের মূল সূত্র হয়ে উঠেছে।

দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। বুধবার থেকেই বাইসারানে তাদের দল ক্যাম্প করে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় তারা প্রত্যক্ষদর্শীদের জেরা করছে, পাশাপাশি হামলার আগমন ও প্রস্থানপথ খতিয়ে দেখছে।

তদন্তকারীরা বলছেন, এটি শুধু একটি হামলা নয়—একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যার নেপথ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের ছায়া। বাইসারান উপত্যকাজুড়ে এখন চলছে চিরুনি তল্লাশি, যার উদ্দেশ্য : সন্ত্রাসের এই রক্তাক্ত ছককে সম্পূর্ণভাবে উদঘাটন করা।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর