শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪২ অপরাহ্ন

হিজবুত তাওহীদ নিষিদ্ধের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম..

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২৩ বার পঠিত হয়েছে
হিজবুত তাওহীদ নিষিদ্ধের দাবিতে রংপুরের পীরগাছায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভরত জনতা। ছবি: Max tv bd

রংপুরের পীরগাছায় হিজবুত তাওহীদের কর্মীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় সংগঠনটিকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার পারুল ইউনিয়নের নাগদাহ সিদামবাজার থেকে স্থানীয়রা বিক্ষোভ মিছিল বের হরে দেউতি বাজারে এসে পীরগাছা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে। প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলা এই অবরোধ চলাকালীন বিক্ষুব্ধ জনতা হিজবুত তাওহীদ নিষিদ্ধের দাবিতে নানা স্লোগান দেয়। পরে অবরোধ তুলে নিয়ে মানববন্ধন থেকে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, হিজবুত তাওহীদ একটি বিতর্কিত সংগঠন, যারা নবী-রাসূল ও হাদিসকে অস্বীকার করে এবং ইসলাম ধর্মকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে। বক্তারা দাবি করেন, সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা গোপন বৈঠক করার সময় এলাকাবাসী বাধা দিলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে বহু গ্রামবাসী গুরুতর আহত হন। বক্তারা হিজবুত তাওহীদ নিষিদ্ধসহ এলাকাবাসীর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

মানববন্ধনে মিজানুর রহমানসহ আরও কয়েকজন তাদের বক্তব্যে বলেন, হিজবুত তাওহীদ আওয়ামী মদদপুষ্ট একটি সংগঠন। মহানবী (সা.)-কে অবমাননাকারী এ সংগঠনকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এর আগে গত সোমবার সকালে উপজেলার নাগদাহ সিদাম এলাকায় হিজবুত তাওহীদের রংপুর বিভাগীয় সভাপতি আবদুল কুদ্দুস শামীমের বাড়িতে একটি সভার আয়োজনকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ বাঁধে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। সংঘর্ষের সময় কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয় এবং প্রায় ২০টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে হিজবুত তাওহীদের ৩৯ জন কর্মী-সমর্থকসহ ৩-৪ শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পীরগাছা থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

এদিকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিও বার্তায় হিজবুত তাওহীদের রংপুর বিভাগীয় সভাপতি আবদুল কুদ্দুস শামীম দাবি করেন, তিনি সংগঠনের বিভাগীয় সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ায় তার বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের অংশ হিসেবে সোমবার সকালে নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রস্তুতিমূলক মিটিং করা হচ্ছিল। এ সময় তাদের ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় জামায়াতের নেতাকর্মীরা জড়িত বলে দাবি করেন তিনি।

তবে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর বজলুর রশীদ তার অভিযোগ অস্বীকার করে Max tv bdকে বলেন, কারও ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগিয়ে স্বার্থ হাসিল করা জামায়াতের আদর্শের পরিপন্থী। এ ঘটনায় জামায়াতের কেউ জড়িত নয়। বরং আমাদের লোকজন প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন প্রত্যক্ষ করেছে গ্রামবাসীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে।

পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী Max tv bdকে জানান, এ ঘটনায় মঙ্গলবার ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৩-৪ শতাধিক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর