কোনো ঘটনা ঘটলে এর প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। যে কোনো দাবি আদায়ের বিষয় হলেও এ মহাসড়কই অবরোধের কবলে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের যখন তখন এহেন কর্মসূচিতে দুর্ভোগে পড়েন দূরদূরান্তের যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ।
মহাসড়ক বন্ধ থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই স্থানে বসে থাকতে হয় যাত্রীদের। দীর্ঘ যানজটে দূরপাল্লার বাসগুলো নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছাতে পারে না তাদের গন্তব্যে। আবার পথে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিশেষ করে দূরপাল্লার যাত্রীদের মধ্যে শিশু ও বয়স্করা বেশি সমস্যায় পড়ছেন।
তাঁত বোর্ড থেকে বস্ত্র অধিদপ্তরে অধীন শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি উপেক্ষা করে নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার কলেজের কার্যক্রম বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের অন্যত্র শিক্ষাদানের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে তারা এ অবরোধ করেন। একই দিন সকাল ১০টার দিকে আলম হত্যার বিচারের দাবিতে মহাসড়কের নরসিংদীর পাঁচদোনা মোড়ে সড়ক অবরোধ করা হয়। এর আগেও কয়েকবার নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন।
আর আন্দোলনকারীদের এসব লাগাতার কর্মসূচিতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। সিলেটগামী রাতুল হাসান নামে একজন যাত্রী বলেন, মাসে অন্তত ৩ থেকে ৪ বার সিলেট শহর থেকে আমাকে ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় যেতে হয়। প্রায় সময়ই হয় নরসিংদীর মাধবদী, না হয় পাঁচদোনা, সাহেপ্রতাপ, ভেলানর, ইটাখোলা এলাকায় যানজটে পড়তে হয়। জানতে পারি মহাসড়ক অবরোধের কারণেই এ যানজট।
এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) নরসিংদীর সম্পাদক হলধর দাস বলেন, যে কোনো দাবি বাস্তবায়নের একটি মাধ্যম যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। পান থেকে চুন খসলেই দাবি আদায়কারীরা মহাসড়কে মানববন্ধন, সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচিসহ সড়ক অবরোধ করেন। এতে হাজার হাজার যাত্রী যেমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, তেমনই দেশে নরসিংদীর সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বর্তমানে ঢাকা থেকে সিলেট পর্যন্ত ছয় লেনের কাজ চলছে। দেখা যাবে ভবিষ্যতে দাবি আদায়ে ওই ছয় লেন বন্ধ করে রাখবে তারা। এখনই এ সমস্যার সমাধান না হলে দিন দিন এর পরিণত ভয়াবহ হবে।
নরসিংদীর শিল্পপতি মোজাম্মেল হক বলেন, বর্তমানে পুলিশকে তোয়াক্কা না করে ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ মহাসড়কে নেমে যাচ্ছে, বন্ধ করে দিচ্ছে যান চলাচল। এতে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কের দিন পার করছে।
এ ব্যাপারে নরসিংদী আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সারোয়ার হোসেন মৃধা বলেন, দেশের এই প্রেক্ষাপটে রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই শোচনীয়। বিশেষ করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ছয় লেনের কাজ চলমান। এ কারণে মানুষের এমনিতেই দুর্ভোগ। এর ওপর মহাসড়ক অবরোধ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। আবার সড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা তো আছেই।