মোঃ জমির হোসেন,স্টাফ রিপোর্টারঃ-“
মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়” এর ৭ম শ্রেণী’র মেধাবী ছাত্রী আনিকা আক্তার শরীফা’র মৃত্যুতে “বেনাপোল কাষ্টমস হাউজ” সম্মুখে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এক “মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার (৬ আগষ্ট) সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেয় “বেনাপোল ডিগ্রী কলেজ”র শিক্ষার্থীরাও। “নিরাপদ সড়ক চাই-মায়ের কোল শূন্য হওয়ার বিচার চাই-বেনাপোলে সড়ক পথের অব্যবস্থাপনার অবসান চাই’-এই প্লাকার্ড বহন করে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানাতে থাকে। এ সময় স্কুলের অভিভাবকগণ ও নিহত আনিকা’র পিতা আলমগীর হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
শোক সমাবেশে বক্তারা বলেন, “আমরা আমাদের সহপাঠীর মৃত্যুর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি, আর যেন কোন মায়ের কোল শূন্য না হয়, নিরাপদ সড়কের দাবিতে সবাই আন্দোলনে নেমেছি, সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি সরকার যেন আমাদের জন্য নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমজান আলী নিহত স্কুল ছাত্রী আনিকা’র পরিবারের ক্ষতিপূরণ, দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, সড়ক সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবি জানান।
প্রতিবাদ সমাবেশে স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক ইনতাজুল ইসলাম জানান, বন্দরের জায়গা সংকটের কারণে ভারতে রপ্তানিমুখী ট্রাক টার্মিনালটি এখন ক্রেন ও ফর্কলিফট এর গ্যারেজ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যার ফলে বেনাপোলের প্রধান সড়কটির ২ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে প্রতিনিয়ত রাখা হচ্ছে শত শত ট্রাক। সে কারণেই স্কুল, কলেজ পড়ুয়া ও এলাকার সাধারণ মানুষেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হতে গেলে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন। আমরা বেনাপোল বন্দরের প্রধান সড়কে প্রতিদিনের এ তীব্র যানজটের প্রতিকার চাই। যাতে আমাদের কমলমতি শিক্ষার্থীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে। পাশাপাশি স্কুলের সামনে স্পীড ব্রেকার বসানোর দাবি জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি ট্রাকে এর আগেও সড়ক দুর্ঘটনায় শিকার হয়ে অনেকে প্রাণ ঝরেছে। দূর্ঘটনান কারন সম্পর্কে স্থানীয়রা আরও বলেন,”বন্দর এলাকা জুড়ে বাইপাস সড়ক এবং মহাসড়ক সমূহে ভারতীয় পণ্য বোঝাই ও পণ্যবিহীন ট্রাক ইচ্ছামত যত্রতত্র রাখায় রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে যানজটের সৃষ্টি করছে। তারা আরও বলেন, ভারতীয় পণ্য খালাসের জন্য কিংবা পণ্যবিহীন ট্রাক অবস্থান নেওয়ার জন্য বন্দরে একটি ভারতীয় ট্রাক টার্মিনাল থাকা সত্বেও বন্দর কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারনে সড়কসমূহে প্রতিনিয়তই যানজট লেগেই আছে। কারন হিসেবে তারা বলছেন,ভারতীয় ট্রাকটার্মিনালটিতে ট্রাকের পরিবর্তে সেখানে খোলামাঠ দেখিয়ে পণ্য রাখা হচ্ছে,মূলতঃ সে কারনেই বেনাপোল বন্দর জুড়ে সড়ক সমূহে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে এবং প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনা ঘটছে। যার জন্য আজ কোমলমতি শিক্ষার্থী আনিকা’র পাণ গেল”।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (২ আগস্ট) সকালে বাড়ি থেকে স্কুলে আসার পথে বন্দর সংলগ্ন বড় আঁচড়া মোড় নামক স্থানে রপ্তানিকৃত পণ্য বোঝাই বাংলাদেশী ট্রাক চাপায় আনিকা আক্তার নিহত হয়। নিহত স্কুল ছাত্রী আনিকা বেনাপোল মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী। তার রোল নম্বর-৪। সে বেনাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়া গ্রামের ফেরি ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনের মেয়ে। পুলিশ ট্রাকসহ চালককে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।