শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪২ অপরাহ্ন

যে কারণে খালাস পেলেন তারেক রহমানসহ গ্রেনেড হামলা মামলার সব আসামি

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৮১ বার পঠিত হয়েছে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ছবি: সংগৃহীত

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিদের খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার (১ নভেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

তারেক রহমানসহ সব আসামি খালাস পাওয়ার বিষয়ে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, এই ঘটনাটি ঘটেছে ২০০৪ সালে। তখন তৎকালীন সরকারের অধীনে একটি তদন্ত হয়েছিল, কিন্তু রিপোর্ট হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ৯ জুন প্রথম একটি তদন্ত রিপোর্ট সাবমিট করা হয়। সেখানে ২৮ জনকে আসামি করা হয়। ৬১ জন সাক্ষী হয়ে যাওয়ার পরে আরেকটি তদন্ত করা হয়। এই তদন্তে এসে আরও ৩০ জনকে নতুন আসামি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় তদন্ত করা হয় মুফতি হান্নানের দ্বিতীয় কনফেশনের ওপর ভিত্তি করে। আদালতের কাছে প্রথম প্রশ্ন মুফতি হান্নান যে দ্বিতীয় কনফেশন দিয়েছেন উপমহাদেশের ৪০০ বছরের ফৌজদারী ইতিহাসে এই ধরণের কোনো দ্বিতীয় কনফেশন হয় কিনা, হলে এরকম সাজা হয়েছে কিনা? আমরা আদালতে দেখিয়েছিলাম এই ভারতীয় উপমহাদেশে বিগত ৪০০ বছরের ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে দ্বিতীয় কনফেশনের ওপর ভিত্তি করে এই ধরণের সাজা কাউকেই দেয়া হয় নাই। খুবই ইন্টারেস্টিং বিষয় যে, ২২৫ জন সাক্ষী নেয়া হয়েছে। এই ২২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে যাদের কনফেশন আছে সকলকেই টিএফআই সেলে (টাস্কফোর্স ইন্টিলিজেন্স সেল) ২০০, ২২০, ২৬১ দিন পর্যন্ত আসামিদের রাখা হয়েছে। ফলে তাদের কনফেশনের আইনগত কোনো মূল্য নাই।

আইনজীবী শিশির মনির আরও বলেন, টিএফআই সেলে যাদের রাখা হয়েছিল, টর্চার করা হয়েছে যাদের তারা একজন বলেছে আরেকজনকে দেখেছে, শুনেছে। কিন্তু কী কথা হয়েছে, কী কন্সপিরিটি হয়েছে তার কোনো উত্তর দিতে পারেনি। ইন্টারেস্টিং হলো বাবর, আব্দুস সালাম পিন্টু, কায়কোবাদসহ যাদেরকে পরবর্তীতে চার্জশিটে আনা হয়েছে এর মূলভিত্তি ছিল রাজনৈতিক বিবেচনা। এই রাজনৈতিক বিবেচনায় তারা বিচার করেছে। কাকে কাকে আসামি করলে পরে রাজনৈতিকভাবে দোষারূপ করা যাবে। প্রকৃত আসামি তারা খুঁজতে যায়নি।

তিনি আরও বলেন, আজকে আদালতের সামনে দুটি মূল প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে, মুফতি হান্নানের দ্বিতীয় কনফেশনের ওপর ভিত্তি করে কোনো সাজা দেয়া যাবে কিনা। আদালত বলেছে নো। দ্বিতীয় কনফেশনের ওপর ভিত্তি করে কাউকে কোনো সাজা দেয়া যাবে না। আরেকটি হলো পরবর্তীতে যে তদন্ত হয়েছে এর মামলার আমলে গ্রহণের আদালত কোনটা হবে। এই আমলে গ্রহণ করার আদালত হয়েছে ট্রায়াল কোর্ট। আইনে আছে আমলে গ্রহণ করবে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এখন দেখা গিয়েছে আমলি আদালত আমলে গ্রহণ না করে যা বিচারিক আদালত গ্রহণ করেছে। হাইকোর্ট বলেছেন এইটা বাংলাদেশের সকল সিদ্ধান্তের আলোকে অবৈধ হয়েছে এবং এই জন্য এই ট্রায়ালটাকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। আমি যেটা বলতে চাই সকল বিবেচনায় ২১ আগস্টে যা হয়েছে তার সঠিক বিচার হোক। কিন্তু যাকে ইচ্ছা তাকে আসামি করা যাবে না, এইটা তার এক শিক্ষা। প্রমাণ যদি না থাকে তাহলে রাজনৈতিক বিবেচনায় কারো ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে যদি বিচার করা হয় তাহলে তার শেষ পরিণতি ভালো হয় না। এখান থেকেই তার শিক্ষা নিতে হবে।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর