লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার ভূমিহীন রহিমা বেগম (৭৭)। বিয়ের কয়েক বছর পর স্বামী বছর উদ্দিন মারা গেলে সেই অভিমানে আর বিয়ের পিঁড়িতে বসেননি তিনি। নিঃসন্তান আর নিঃসঙ্গ জীবন নিয়ে তিস্তা নদীর পাড়ে জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে ঠাঁই হয়েছে ওনার। বয়সের ভারে চোখে ঝাপসা দেখা রহিমা প্রতিদিন সকাল হলেই কেউ খাবার নিয়ে আসবে সেই আশায় পথ চেয়ে বসে থাকেন। এলাকাবাসীর কেউ খাবার দিলে দুমুঠো খেতে পারেন তিনি। তবে মাঝেমধ্যেই অনাহারেই থাকতে হয় বৃদ্ধা রহিমাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সিঙ্গিমারি ইউনিয়নের ধুবনী এলাকায় থাকেন ভূমিহীন রহিমা বেগম। তিস্তা নদীর কোলঘেঁষে প্রতিবেশীর দেওয়া টিন আর পরিত্যক্ত পাটের লাকড়ি দিয়ে তৈরি একটি ঘরে কোনোরকম মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।
বৃদ্ধা রহিমার প্রতিবেশী আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে অসহায় এ মানুষটি বাড়ি বাড়ি চাল-ডাল সংগ্রহ করে দিনযাপন করছিলেন ৷ পাড়া-প্রতিবেশীদের দেওয়া দুমুঠো খাবারেই ক্ষুধা নিবারণ করেন।’
বৃদ্ধা রহিমা বেগম বলেন, ‘মোর কাও নাই! বয়স হইছে চৌকে (চোখে) দেখিবার পাং না। মানুষ খাবার দেয় সেই খাবার খেয়া থাকোং, আবার কোনো দিন না খেয়েও থাকোং। সবারে বাড়িত কারেন্ট আছে মোরে বাড়িত নাই। রাইতোত (রাতে) অনেক কষ্টে ব্যারাং। ’
তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যা হলে চাটির (বেড়া) ফাঁক দিয়া বাতাস ঢুকে তখন খুব ঠান্ডা নাগে (লাগে)। ফির বাইসশ্যার (বর্ষাকালে) সময় ঘরত তিস্তার পানি ওঠে। সবাই বোলে সরকারি ঘর পায় মোরে কপালত ঘর নাই। সরকার যদি মোক একটা ঘরের ব্যবস্থা করি দেইল হয় তাইলে উপকার হইল হয়।’
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দুলাল হোসেন বলেন, ‘রহিমা বেগমের বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। খোঁজখবর নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে৷ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে৷