মোঃ মজিবর রহমান শেখ,
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পাহাড়ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরীসহ ৬টি পদে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ঐ বিদ্যালয়ের সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন আব্দুল হাকিম নামে এক ভূক্তভোগী। ১৪ মে রোববার দুপুরে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করেন তিনি। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক নিত্যানন্দ সরকার মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার আসামীরা হলেন– ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পাহাড়ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দীন। ফজলুল হক (৬৩) পাহাড়ভাঙ্গা গ্রামের মৃত মনিরুদ্দীনের ছেলে এবং কফিল উদ্দীন (৫১) চিলারং গ্রামের খমির উদ্দীনের ছেলে।
মামলার আরজিতে জানা যায়, চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি নৈশ প্রহরী সহ ৬ টি পদে লোক নিয়োগের জন্য পাহাড়ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। চাহিদা মোতাবেক যথারীতি বাদীর ভাই সোহেল রানা আবেদন দাখিল করেন। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের সভাপতি বাদীকে তার বাড়িতে ডেকে পাঠান। সেখানে নৈশ প্রহরীর চাকুরির জন্য বিদ্যালয়ের সভাপতি ১২ লক্ষ টাকা অনুদান দাবি করেন। ঐ সময় প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দীনও সভাপতির কথায় সায় দিয়ে বলেন যে, ঐ পরিমান টাকা দিলে তার ভাইয়ের চাকরি হবে। পরে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক তাদের কাছে ১২ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। এছাড়াও চাকুরি দেওয়ার নাম করে তারা একাধিক ব্যাক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু চলতি বছরের ২১ মার্চ মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজে উক্ত নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যার ফলাফল পরবর্তীতে প্রকাশিত হলে ভুক্তভোগীর ভাইয়ের নাম না থাকায় বিষয়টি নিয়ে বাদী হাকিম অত্র স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে ১২ লক্ষ টাকা ফেরত চান। এতে তাল টালবাহানা শুরু করে এবং এক পর্যায়ে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। পরে ঐ ভূক্তভোগী আদালতের আশ্রয় নেন।
এদিকে মামলার বাদী আব্দুল হাকিম বলেন, আমি আমার গরু ছাগল সহ জমি বন্ধক দিয়ে পাহাড়ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে ১২ লক্ষ টাকা দিয়েছি। সেই ফেরৎ না দিয়ে গড়িমসি করছে, এখন আমি সর্বশান্ত। ন্যায্য বিচার পাবার আশায় আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইন্দ্রনাথ রায় বলেন, পাহাড়ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ নিয়ে বাদী আব্দুল হাকিম তার ভাইয়ের জন্য স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে ১২ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। চাকরি দিতে না পারায় আব্দুল হাকিম টাকা ফেরত চাইলে তারা টাকা ফেরৎ দিতে অস্বীকৃতি জানায় । আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তপূর্ব আগামী ২৩ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, পাহাড়ভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল জিটিভিতে সংবাদ প্রচারিত হওয়ায়। গত ২৮ এপ্রিল ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিটিভির জেলা প্রতিনিধি এমদাদুল হক ভূট্টো’র বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং মানহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
মোঃ মজিবর রহমান শেখ
০১৭১৭৫৯০৪৪৪