শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২০ অপরাহ্ন

বাকপ্রতিবন্ধী বিধবা ভিক্ষুক নারীর বয়স্ক ভাতার টাকা জালিয়াতি করে খাচ্ছে মেম্বার !

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৭৩ বার পঠিত হয়েছে

ঠাকুরগাঁওয়ে বাকপ্রতিবন্ধী বিধবা ভিক্ষুক নারীর বয়স্ক ভাতার টাকা জালিয়াতি করে খাচ্ছে মেম্বার !
মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,,সহিরন বেওয়া নামে এক বাকপ্রতিবন্ধী বিধবা ভিক্ষুক নারীর বয়স্ক ভাতার টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনয়নে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্যে নাম মো: ফারুক। এ বিষয়ে ভুক্তভুগি নারীর লিখিত অভিযোগ তদন্ত করছেন সমাজসেবা অধিদপ্তর। এমন অসংখ্য অভিযোগের সমাধানে লাইভ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে প্রকৃত ভাতা ভোগীদের হাতে সরকারি অর্থ পৌছাতে কাজ করছে সমাজসেবা অধিদপ্তদর। অভিযোগের বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো: ফারুক।
৯৩ বছর বয়সী সহিরন বেওয়া ঐ ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের মৃত মুনিরউদ্দীনের স্ত্রী। ভিক্ষা করে জীবন চলে তার। স্বামী মারা গেছে অনেক আগে। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করছেন। সংসারের প্রয়োজনে ভিক্ষা করেন সহিরন। সরকার বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত ব্যাংকের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতার পেয়েছেন সহিরন। পরে মোবাইলে ভাতা দেওয়া শুরু হলে ইউপি সদস্য ফারুক ছেলে শাকিলের মোবাইল নম্বর দেয় সহিরনের স্থানে। র্দীঘদিনেও সহিরন ভাতার টাকা না পেয়ে ইউপি সদস্য ফারুকের সাথে যোগাযোগ করলে সহিরনের ভাতার কার্ডটি নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েদেয় ফারুক। চলতি মাসে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে সহিরন জানতে পারেন তার ভাতার কার্ড বন্ধ হয়নি বরং টাকা যাচ্ছে ইউপি সদস্য ফারুকের ছেলে শাকিলের মোবাইল নম্বরে। বিষয়টি এখন ঐ ইউনিয়নে মানুষের মুখে মুখে। এমন অসহায় নারীর বয়স্ত ভাতার টাকা আত্মসাত করায় ইউপি সদস্য ফারুকের শাস্তির দাবি করছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা বলছেন ,সরকারি ভাতা করে দেওয়ার নামে আরও অনেকের কাছে টাকা নিয়ে ভাতা করে দেননি ইউপ সদস্য ফারুক।
সু-সাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি প্রফেসর মনতোষ কুমার দে জানান, কিছু অসাধু জনপ্রতিনিধি এসব কাজে লিপ্ত। তাদের শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে সেই সাথে নিজেদের আরও সচেতন হতে হবে। প্রকৃত ভাতা ভোগীরা যাতে ভাতা পায় সে জন্য প্রতি বছর লাইভ ভেরিফিকেশনের ব্যবস্থা চালু করতে হবে। ঠাকুরগাঁও
সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ শরিফুল ইসলাম জানান, সহিরনের অভিযোগটির তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ –পরিচালক মো: আল – মামুন জানান, অভিযোগ রয়েছে মৃত মানুষের ভাতা পাচ্ছে অনেকে। আর কোন কোন ক্ষেত্রে প্রকৃত ভাতাভোগীর টাকা যাচ্ছে অন্যের মোবাইলে যারা সেই টাকা আত্মসাৎ করছেন। এ বিষয়ে লাইভ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। লাইভ ভেরিফিকেশন দ্রুত সময়ে শেষ হলে প্রকৃত ভাতাভোগীদের আর অভিযোগ থাকবেনা।
ঠাকুরগাঁও জেলায় বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৬৫ জন। লাইভ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে ভূয়া ভাতা ভোগীদের তালিকা বাতিল হবে সেই সাথে প্রকৃত ভাতা ভোগীরা তাদের টাকা হাতে পাবে।

মোঃ মজিবর রহমান শেখ
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর