শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:১১ অপরাহ্ন

নবীজির ঘোষণায় ভূমিকম্পে মৃত্যদের মর্যাদা

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৯ বার পঠিত হয়েছে
ভূমিকম্প মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সতর্ক বার্তা। কিয়ামতের আলামত ও আজাব দেওয়ার একটি অন্যতম মাধ্যম। পূর্ব যুগে মহান আল্লাহ বহু জাতিকে আজাব দিয়ে ধ্বংস করেছেন। তার মধ্যে কিছু জাতির ওপর আল্লাহ প্রদত্ত আজাব ছিল ভূমিকম্প।

যেমন—শোয়াইব (আ.)-এর জাতিকে মহান আল্লাহর অবাধ্যতা, মাপে কম দেওয়া, অন্যের সম্পদ লুটপাট করা এবং অন্যায়ভাবে জনগণের সম্পদ ভক্ষণ করার কারণে ভূমিকম্প দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছিল। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর ভূমিকম্প তাদের পাকড়াও করল। তারপর তারা তাদের গৃহে উপুড় হয়ে মরে রইল।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৯১)
এমনিভাবে লুত (আ.)-এর জাতিকেও অবাধ্যতা ও সমকামিতা প্রসারের কারণে ভূমিকম্প দিয়ে উল্টে দেওয়া হয়।

সালেহ (আ.)-কে আল্লাহর নিদর্শন পাঠানো উষ্ট্রী হত্যার অপরাধে তার জাতিও ভূমিকম্পের আজাবে ধ্বংস হয়েছিল।
আমাদের মহানবী (সা.)-ও তাঁর উম্মতদের ভূমিকম্পের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন গনিমতের (যুদ্ধলব্ধ) সম্পদ ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হবে, আমানতের মাল লুটের মালে পরিণত হবে, জাকাতকে জরিমানা মনে করা হবে, ধর্মবিবর্জিত শিক্ষার প্রচলন হবে, পুরুষ স্ত্রীর অনুগত হয়ে যাবে কিন্তু নিজ মায়ের অবাধ্য হবে; বন্ধু-বান্ধবকে কাছে টেনে নেবে, কিন্তু পিতাকে দূরে ঠেলে দেবে; মসজিদে কলরব ও হট্টগোল করবে, পাপাচারীরা গোত্রের নেতা হবে, নিকৃষ্ট লোক সমাজের কর্ণধার হবে, কোনো মানুষের অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য তাকে সম্মান দেখানো হবে, গায়িকা-নর্তকী ও বাদ্যযন্ত্রের বিস্তার ঘটবে, মদপান করা হবে, এই উম্মতের শেষ জামানার লোকেরা তাদের পূর্ববর্তী মনীষীদের অভিসম্পাত করবে, তখন তোমরা অগ্নিবায়ু, ভূমিধস, ভূমিকম্প, চেহারা বিকৃতি ও পাথর বর্ষণরূপ শাস্তির এবং আরো আলামতের অপেক্ষা করবে, যা একের পর এক নিপতিত হতে থাকবে, যেমন—পুরনো পুঁতির মালা ছিঁড়ে গেলে একের পর এক তার পুঁতি ঝরে পড়তে থাকে। (তিরমিজি, হাদিস : ২২১১)

তাই মুসলমানদের উচিত সমাজে ছড়িয়ে পড়া পাপাচার থেকে নিজেরা বিরত থাকা এবং পরিবার ও অন্য মুসলমানদেরও সতর্ক করা।

তবে ভূমিকম্পের কারণে কোনো ব্যক্তি বা পরিবার দুর্ঘটনার শিকার হলে শুধু তাকে পাপিষ্ঠ ভাবার সুযোগ নেই। কেননা মহানবী (সা.) ভূমিকম্পে নিহত হওয়া ব্যক্তিকে শহীদ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি যখন কোনো পথ দিয়ে যাচ্ছিল, তখন রাস্তায় কাঁটাযুক্ত (বৃক্ষের) শাখা দেখতে পেয়ে সে তা তুলে ফেলল। আল্লাহ তাআলা তার এই কাজটি গ্রহণ করলেন এবং তার গুনাহ মাফ করে দিলেন। [রাসুল (সা.)] আরো বলেছেন, শহীদ পাঁচ প্রকার—(১) প্লেগাক্রান্ত (বা মহামারিতে মৃত), (২) পেটের পীড়ায় মৃত, (৩) যে পানিতে ডুবে মারা গেছে, (৪) ভূমিকম্পে কিছু চাপা পড়ে যার মৃত্যু হয়েছে এবং (৫) আল্লাহর পথে যে ব্যক্তি শহীদ হয়েছেন।

(মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ২৮৫)

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর