রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৭ অপরাহ্ন

ফেসবুকে ফ্রি ভেরিফিকেশন পেতে যা করতে হবে

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৬৫ বার পঠিত হয়েছে
ছবি : সংগৃহীত

আজকের যুগে নীল ব্যাজ বা ‘ভেরিফায়েড’ আইডি মানেই আলাদা পরিচয়, বিশ্বাসযোগ্যতা আর সম্মানের প্রতীক। বিশেষ করে সাংবাদিক, রাজনীতিক, উদ্যোক্তা, সংগঠন কিংবা কনটেন্ট ক্রিয়েটর—যে কেউই এখন চান নিজের ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজের পাশে সেই নীল টিক চিহ্নটি দেখতে। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে, এই নীল ব্যাজ পেতে টাকা খরচ না করেও এখনো ফ্রি পাওয়ার কিছুটা সুযোগ আছে! অর্থাৎ যারা যোগ্য, তারা একদম ফ্রি-তে পেতে পারেন ফেসবুকের সেই কাঙ্ক্ষিত ভেরিফায়েড ব্যাজ।

টুইটার প্রথমবারের মতো ২০০৯ সালে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট যাচাই বা ভেরিফিকেশনের ধারণা চালু করে। পরে ২০১৩ সালে ফেসবুক নিজস্ব নীল ব্যাজের ব্যবস্থা চালু করে, যাতে প্রকৃত ব্যক্তি বা সংগঠনের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়।

বর্তমানে ফেসবুকে দুই ধরনের ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া চালু রয়েছে, একটি হলো ট্র্যাডিশনাল (ফ্রি) ভেরিফিকেশন, আর অন্যটি মেটা ভেরিফায়েড (পেইড সাবস্ক্রিপশন)।

কারা ফেসবুক ভেরিফিকেশন পেতে পারেন

আগে শুধু বড় ব্র্যান্ড, জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব বা উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানের জন্যই ফেসবুক ভেরিফিকেশন ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে মেটা ভেরিফায়েড প্রোগ্রাম চালুর পর এখন প্রায় যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানই যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মাসিক ফি দিয়ে ব্যাজ পেতে পারেন। তবে এখনো ফ্রি ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া চালু রয়েছে, যদিও অনুমোদন পাওয়া অনেক কঠিন। কারণ ফেসবুক এখন পেইড প্ল্যানকেই বেশি অগ্রাধিকার দেয়।

ফ্রি (ট্র্যাডিশনাল) ভেরিফিকেশনের যোগ্যতা

মেটার নির্দেশনা অনুযায়ী, আপনি যদি নিচের শর্তগুলো পূরণ করেন, তাহলে টাকা ছাড়াই ফেসবুক ভেরিফিকেশনের জন্য আবেদন করতে পারেন।

১. অ্যাকাউন্টটি আসল এবং সক্রিয় হতে হবে।

২. একই নামের একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকা যাবে না (ভাষাভিত্তিক ব্যতিক্রম ছাড়া)।

৩. প্রোফাইল বা পেজে থাকতে হবে ‘About’ সেকশন, প্রোফাইল ছবি এবং অন্তত একটি সাম্প্রতিক পোস্ট।

৪. এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান হতে হবে, যাকে ফেসবুকে অনেকেই সার্চ করে।

৫. ফেসবুক ও মেটার নীতিমালা এবং কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করতে হবে।

প্রমাণপত্র

ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্ক্যান কপি প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠানের জন্য লাগবে রেজিস্ট্রেশন সনদ, ট্যাক্স বা ব্যবসায়িক নথি। প্রয়োজনে ফোন বা বিদ্যুৎ বিলও ব্যবহার করা যায়।

ফ্রি ফেসবুক ভেরিফিকেশন করবেন যেভাবে

১️. [Facebook Verification Request Form](https://www.facebook.com/help/contact/342509036134712) এ যান। ২️. যেই পেজ বা প্রোফাইল ভেরিফাই করতে চান তা সিলেক্ট করুন, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করুন। ৩️.‘Notability’ বা জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিন। যেমন : সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত লিংক, অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ইত্যাদি। ৪️. ফর্ম পূরণ শেষে ‘Send’ ক্লিক করুন।

এরপর অপেক্ষা করুন। যদি সঙ্গে সঙ্গে ‘Rejected’ মেসেজ না আসে, তাহলে ফেসবুক আবেদন পর্যালোচনা করবে। ব্যর্থ হলে ৩০ দিন পর আবার আবেদন করা যাবে।

কেন ভেরিফিকেশন জরুরি

ফেসবুকে নীল ব্যাজ থাকলে আপনার প্রোফাইল বা পেজের বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেড়ে যায়। এতে ভুয়া অ্যাকাউন্টের প্রভাব কমে এবং সার্চ রেজাল্টেও আপনার পেজ উপরের দিকে আসে। অর্থাৎ মানুষ সহজে খুঁজে পায় এবং আস্থা পায় যে এটি আসল অ্যাকাউন্ট।

ভেরিফিকেশন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে করণীয়

১. অ্যাকাউন্টে ঘন ঘন পরিবর্তন করবেন না

নাম, প্রোফাইল ছবি বা ইউজারনেম বারবার বদলালে ফেসবুক সন্দেহ করে।

২. সম্পূর্ণ প্রোফাইল রাখুন

প্রোফাইল ছবি, কভার ফটো, বিভাগ (Category) এবং ‘About’ সেকশন পূর্ণ থাকতে হবে।

৩. পেজের নাম সঠিক রাখুন

অশালীন শব্দ, ‘official’ শব্দের অপব্যবহার, অপ্রয়োজনীয় চিহ্ন বা সব বড় অক্ষরে লেখা নাম ব্যবহার করবেন না।

৪. কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলুন

অবৈধ বা বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট, কপিরাইট ভঙ্গ বা হুমকিমূলক পোস্ট এড়িয়ে চলুন।

শেষ কথা

ফেসবুক ভেরিফিকেশন এখন কেবল জনপ্রিয়দের জন্য নয়; বরং টাকা-পয়সা না খরচ করেই সাধারণ ব্যবহারকারীও চাইলেই পেতে পারেন নীল ব্যাজ! শুধু শর্তগুলো মানুন, প্রোফাইল পরিপূর্ণ রাখুন, আর সঠিকভাবে আবেদন করুন। ভাগ্য ভালো হলে খুব অল্প সময়েই আপনার নামের পাশে জ্বলে উঠবে সেই কাঙ্ক্ষিত নীল টিকচিহ্ন।

সূত্র : হুটস্যুট

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর