বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির বৈঠক

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৬০ বার পঠিত হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের একটি হোটেলে তাদের মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে ইতালি-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামকে কেন্দ্র করে আলোচনা হয়। আলোচনায় নিরাপদ অভিবাসনের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ডিসেম্বরে ঢাকায় আসার পরিকল্পনা জানিয়েছেন।

এর আগে দিনের শুরুতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে তিনি ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবের সঙ্গে বৈঠক করেন।

তিনি পাঁচটি অগ্রাধিকার তুলে ধরে বলেন, এগুলো কার্যকর করলে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য, বৈষম্য ও আর্থিক অস্থিরতার সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে। অধ্যাপক ইউনূস আরও যোগ করেন, আমাদের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর শোনার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। বাংলাদেশে আমরা বিশ্বাস করি, দারিদ্র্য একজনের স্বপ্নের পথে বাধা হতে পারে না।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ‘টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিশীল বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রথম দ্বিবার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে অর্থায়নের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এই বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ায় তার জন্য গর্বের বিষয়, যেখানে সম্ভাবনা ও দায়িত্ব একসঙ্গে রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, চতুর্থ আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সম্মেলনে নেওয়া অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য বছরে চার ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ ঘাটতি পূরণ করা চ্যালেঞ্জিং হলেও অপরিহার্য।

অধ্যাপক ইউনূস আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও সম্পদের ন্যায্য প্রবেশাধিকারকে ন্যায়বিচারের মূল হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, একজন নারী ব্যবসা শুরু করলে, যুবসমাজ যখন সৌর শক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা পায়, বস্তিবাসী শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায় এবং পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবা পায়- তখন পরিবর্তন বাস্তব ও টেকসই হয়।

প্রধান উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেন, সেভিলে নেওয়া অঙ্গীকার একটি নতুন কাঠামো প্রদান করে, যা দেশীয় সম্পদ উত্তোলন জোরদার করা, অবৈধ অর্থ প্রবাহ প্রতিরোধ, উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর ক্ষমতায়ন এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

প্রধান উপদেষ্টা পাঁচটি অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরেন, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্থায়নকে শক্তিশালী করবে। তা হলো-

১. ন্যায্যভাবে দেশীয় সম্পদ উত্তোলন- আন্তর্জাতিক সহায়তার সমর্থন থাকা প্রয়োজন। কর ব্যবস্থা প্রগতিশীল, স্বচ্ছ ও বহুজাতিক করপোরেশনগুলোর ন্যায্য অংশ নিশ্চিত করতে হবে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক কর সহযোগিতা কাঠামোর আলোচনায় এই বৈষম্য দূর করতে হবে।

২. নবীন অর্থায়ন ও সামাজিক ব্যবসা যৌক্তিক অর্থায়ন এবং এমন উদ্যোগ যারা লাভ পুনরায় সমস্যার সমাধানে বিনিয়োগ করে, চাকরি, অন্তর্ভুক্তি ও মর্যাদা নিশ্চিত করে।

৩. বিশ্ব আর্থিক কাঠামো ও ঋণ শাসন সংস্কার- উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও শক্তিশালী কণ্ঠস্বর নিশ্চিত করতে হবে। ঋণকে কঠোরতা নয়, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের হাতিয়ারে রূপান্তর করতে হবে।

৪. স্বচ্ছতা, অবৈধ অর্থায়ন প্রতিরোধ ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা- জনগণ, বিশেষ করে যুবসমাজ, জানতে হবে কীভাবে সম্পদ ব্যবহার হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. সবচেয়ে দুর্বলদের জন্য বিনিয়োগের ত্বরান্বিতকরণ- স্থিতিশীল বাসস্থান, জলবায়ু-বান্ধব কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান নিশ্চিত করতে হবে।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর