রাজধানীর সড়কে যানজট নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে গতকাল বুধবার দিনভর ছিল তীব্র যানজট। ফলে চরম ভোগান্তিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে নগরীর সাধারণ জনগণ।
বুধবার সকালে রাজধানীর মহাখালী, প্রেস ক্লাব, আজিমপুর ও আশপাশের এলাকায় প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। অনেক স্থানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি একেবারেই আটকে ছিল।
সরেজমিন দেখা যায়, মহাখালীর সাতরাস্তা মোড়ে বেলা ১১টার দিকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা সাত দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। এতে মহাখালী, বনানী, মগবাজার, মালিবাগ, মৌচাকসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। দীর্ঘক্ষণ যানবাহন আটকে থাকায় অনেক যাত্রী গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হন।
প্রেস ক্লাবের সামনে চাকরিপ্রত্যাশীরা ৪২তম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। করোনাকালীন যাদের চাকরির বয়সসীমা শেষ হয়ে গিয়েছিল, তারা বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে মিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় কাকরাইল মোড়ে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে প্রেস ক্লাব, শাহবাগ, পল্টন, কাকরাইল ও আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
বিকেলে আজিমপুর স্যার সলিমুল্লাহ এতিমখানার সামনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ডাকা সমাবেশ কেন্দ্র করে আসাদগেট, সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেট, আজিমপুর এলাকায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এতে শহরের আরও কয়েকটি এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে। দলটি রাষ্ট্র সংস্কার, জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি এবং জুলাই সনদের স্বীকৃতি দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করে।
এ দিন রাজধানীর মালিবাগ থেকে বাংলামোটর যেতে দেড় ঘণ্টা আটকে ছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই আন্দোলন আর সমাবেশের নামে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। অথচ ভোগান্তি আমাদেরই পোহাতে হয়। সকাল ১০টায় অফিসে পৌঁছানোর কথা, অথচ দুপুর ১২টার পরও পৌঁছাতে পারিনি।’
মহাখালী থেকে শাহবাগগামী যাত্রী মিম আক্তার বলেন, ‘একটা জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে দুই থেকে তিনগুণ বেশি সময় লাগছে। গাড়ির ভাড়া বাড়ছে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সাধারণ মানুষের কষ্ট যেন কারও চোখে পড়ে না।’
চালক ও যাত্রীরা অভিযোগ করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আগে থেকে বিকল্প ব্যবস্থা না নেওয়ায় সামান্য আন্দোলনেও পুরো শহর কার্যত অচল হয়ে পড়ছে। ভোগান্তি এড়াতে অনেকে মেট্রোরেল স্টেশনগুলোতে ছুটে যান। কিন্তু সেখানেও টিকিটের জন্য লম্বা লাইন এবং ভিড় দেখা যায়। অনেক যাত্রী টিকিট না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন।