নেপালে দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারি নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে জেনারেশন-জি (জেন-জি) তরুণদের বিক্ষোভের জেরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে অন্তত ১৯ জন প্রাণ হারান, যাদের মধ্যে ১৭ জনই রাজধানী কাঠমান্ডুর। আহত হয়েছেন আরও ৩৪৭ জন, যাদের দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে হাজার হাজার তরুণ রাজপথে নামলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন ও গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়, যা সহিংসতা আরও বাড়িয়ে তোলে।
এই প্রাণহানির দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক নিজেই মন্ত্রিসভায় পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এত মানুষের মৃত্যু কল্পনাতীত। নৈতিকভাবে আমার আর দায়িত্বে থাকা উচিত নয়।”
সরকারের দমননীতির কড়া সমালোচনা করে রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টি (আরএসপি) প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির পদত্যাগ এবং দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। দলটির সাধারণ সম্পাদক কবীন্দ্র বুর্লাকোটি এক বিবৃতিতে বলেন, “সরকার জেন-জি প্রজন্মের ওপর বর্বর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে।”
বিক্ষোভ এখন শুধু কাঠমান্ডুতে সীমাবদ্ধ নেই। বুটওয়াল, ভৈরহাওয়া, ইটাহারি সহ বিভিন্ন জেলায় জারি করা হয়েছে কারফিউ। পূর্বাঞ্চলের দামাকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বাসভবনে ইট-পাটকেল ছোঁড়া হয়েছে এবং ইস্ট-ওয়েস্ট হাইওয়ে অবরোধ করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
চলমান সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রী অলির বাসভবনে জরুরি মন্ত্রিসভা বৈঠক চলছে। কিন্তু কারফিউ ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও বিক্ষোভ থামছে না। ফলে দেশটি এখন মানবিক বিপর্যয় ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের জোরালো দাবির দ্বন্দ্বে এক অনিশ্চিত মোড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।