বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যাত্রী ও আয় দুটোই বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে। পাশাপাশি পর্যটন নগরী কক্সবাজারে নতুন চালু হওয়া ঢাকা-কক্সবাজার রুটও দ্রুতই আয় ও জনপ্রিয়তায় শীর্ষে উঠে এসেছে।
রেলওয়ের তথ্যমতে, গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পূর্বাঞ্চলের ২৯ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন ১ কোটি ৫১ লাখ যাত্রী। তাদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় হয়েছে ৫০৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের আওতায় আছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ।
যাত্রী ও আয়ে শীর্ষে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুট: দেশের দুই গুরুত্বপূর্ণ শহর ঢাকা ও চট্টগ্রামের সংযোগকারী এই রুটে ছয় জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন যাতায়াত করে। এক বছরে এসব ট্রেনে যাতায়াত করেছেন ৪০ লাখ ৩৮ হাজার ৭৩৩ যাত্রী। এ রুট থেকে আয় হয়েছে ১৬৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এর মধ্যে তূর্ণা এক্সপ্রেস থেকে ৩১ কোটি ২০ লাখ টাকা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস থেকে ২৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস থেকে আয় হয়েছে ২৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
স্বল্প সময়ে অধিক আয় কক্সবাজার রুটে: চালু হওয়ার মাত্র দেড় বছরের মাথায় ঢাকা-কক্সবাজার রুটটি যাত্রীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সড়কপথের যানজট ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে অনেকেই এই রুট বেছে নিচ্ছেন। গত এক বছরে ঢাকা-কক্সবাজার রুটের দুই জোড়া ট্রেন থেকে আয় হয়েছে ৮৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে কক্সবাজার এক্সপ্রেস থেকে ৪৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা ও পর্যটক এক্সপ্রেস থেকে আয় হয়েছে ৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এই দুই ট্রেনে যাতায়াত করেছেন ১০ লাখ ২৯ হাজার ২৬৭ যাত্রী। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের দুই জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন থেকে আয় হয়েছে ৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। যাত্রী পরিবহন হয়েছে ৩ লাখ ৯৪ হাজার জন।
আয়ে তৃতীয় সিলেট রুট: ঢাকা-সিলেট রুট থেকে আয় হয়েছে ৭৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এ রুটে যাতায়াত করেছেন ২৬ লাখ ৮৫ হাজার যাত্রী, যা যাত্রীসংখ্যায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। পারাবত এক্সপ্রেস এককভাবে ১০ লাখ ২৪ হাজার যাত্রী বহন করেছে। এতে আয় হয়েছে ২১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম-সিলেট রুট থেকে মোট আয় হয়েছে ২১ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামান বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সব সময় যাত্রী বেশি থাকে, কারণ এটি দেশের অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্রের সংযোগস্থল। অন্যদিকে কক্সবাজার রুট চালুর পর থেকেই লাভজনক হয়ে উঠেছে। আরও ট্রেন চালানো গেলে যাত্রীসংখ্যা আরও বাড়বে, তবে ইঞ্জিন সংকটের কারণে তা এখনই সম্ভব নয়।
রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পূর্বাঞ্চল) মো. সবুক্তগীন বলেন, অন্যান্যবারের তুলনায় বিদায়ী অর্থবছরে যাত্রী ও আয় দুটোই বেড়েছে। ছাত্র আন্দোলনের সময় জুলাই ও আগস্ট মাসে ট্রেন কিছুটা কম চলেছে, না হলে আয় আরও বেশি হতো। চলতি অর্থবছরেও এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে আশা করছি।