দেশ এখন স্থিতিশীল, জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে তিনি কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। এরপর রোহিঙ্গা ইস্যুতে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূলের ভয়াবহ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন থেকে সশস্ত্র ঘাতকদের থামানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সম্পদ ও সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ২০১৭ সালে এবং তারও আগে রোহিঙ্গাদের জীবন বাঁচাতে মানবিক কারণে বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দিয়েছিল। মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মিকে নিশ্চিত করতে হবে যাতে আর কোনো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ না করে
সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংলাপে প্রত্যাবাসন নিয়ে ৭ দফা প্রস্তাব করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূল থেকে রক্ষায় বৈশ্বিক উদ্যোগের আহ্বান জানান।
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবে গতকাল রোববার কক্সবাজারে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন। রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভের কার্যালয় ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ আয়োজনে ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শীর্ষক এ সম্মেলন আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত চলবে।
আজ সোমবার সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে উচ্চপর্যায়ের অধিবেশন শুরু হয়েছে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্যদের মধ্যে রোহিঙ্গাবিষয়ক বিশেষ দূত ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বক্তব্য দেবেন। তারা রোহিঙ্গাদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক (অ্যাড-ইনচার্জ) রানা ফ্লাওয়ার্স, মিয়ানমার বিষয়ক স্বাধীন তদন্ত মেকানিজমের প্রধান নিকোলাস কুমজিয়ান, মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিশেষ দূত টমাস এইচ অ্যান্ড্রুজ এবং জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজু উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমনপীড়নের শিকার হওয়া রোহিঙ্গার ঢল নামে বাংলাদেশের কক্সবাজারে। এর আট বছর পূর্তির মধ্যেই কক্সবাজারে স্টেকহোল্ডারদের এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জাতিসংঘের উদ্যোগে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় রোহিঙ্গাবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের আগে কক্সবাজারের এ স্টেকহোল্ডারদের সংলাপকে প্রস্তুতিমূলক ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।