মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ০২:০৫ অপরাহ্ন

খুলনা খাদ্য বিভাগের আরসি ফুড ও ডিসি ফুড বদলি; দীর্ঘদিনের দু”র্নী”তি আর ঘু”ষ বাণিজ্যের অবসান।

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫
  • ৩৩ বার পঠিত হয়েছে
খুলনা খাদ্য বিভাগের আরসি ফুড ও ডিসি ফুড বদলি; দীর্ঘদিনের দু''র্নী''তি আর ঘু''ষ বাণিজ্যের অবসান।

খুলনা খাদ্য বিভাগের আরসি ফুড ও ডিসি ফুড বদলি;
দীর্ঘদিনের দুর্নীতি আর ঘুষ বাণিজ্যের অবসান।

বিশেষ প্রতিনিধি

খুলনা খাদ্য বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আরসিফুড ইকবাল বাহার চোধুরী ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ডিসি ফুড কাজী সাইফুদ্দীন কে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আরসিফুড ইকবাল বাহার চোধুরী কে অতিরিক্ত পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) খাদ্য অধিদপ্তর,ঢাকা এবং ডিসি ফুড কাজী সাইফুদ্দীন কে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় বরগুনা দায়িত্ব দেয় হয়েছে। গত ১৭ আগস্ট উপ-সচিব জয়নাল মোল্লা স্বাক্ষরিত পত্রে বদলি আদেশ আসে।

একাধিক আভিযোগ জানা যায় সূত্র, খুলনা খাদ্য বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আরসিফুড ইকবাল বাহার চোধুরী বিরুদ্ধে ৩ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ দুদক ৩ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ তুলেছেন খালিশপুরের এক ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) ডিলার। এ বিষয়ে সোমবার (১১ আগস্ট) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ডিলার ইমন শেখ।বিগত জুন মাসে খাদ্য উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) খুলনা জেলার সদস্য মোঃ রিদোয়ান শেখ তামিমি।এর আগে প্রধান উপদেষ্টার কাছে গত ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে দায়ের করা খুলনার খাদ্য পরিদর্শক সেলিম রেজার লিখিত অভিযোগে বেরিয়ে আসে খুলনা খাদ্য বিভাগের চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। আর সেসব অভিযোগের কপি পাঠানো হয় দুদক, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, প্রেসক্লাব ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন খুলনার সম্বয়কদের কাছে। ইতোমধ্যে তার দুনীর্তি ও অনিয়মের সঠিক তদন্ত করে শাস্তির দাবীতে প্রধান উপদেষ্টা ও খাদ্য উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সূত্রে জানা গেছে, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী । তিনি ২০২৪ সালের মার্চ মাসে আরসিফুড হিসাবে খুলনাতে যোগদান করেন। সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের ছত্রছায়ায় এবং মন্ত্রীর জামাতা নাসের বেগের সহায়তায় দূর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতায় অপ্রতিরোধ্য ইকবাল বাহার চৌধুরী নিশ্চিন্তে গড়ে তুলেছেন দুর্নীতির বিশাল সম্রাজ্য।

খুলনার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ছিল । চলমান বোরো সংগ্রহে সীমাহীন অনৈতিকতার আশ্রয় নিয়ে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করে চলেছেন ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর এ অসাধু কর্মকর্তা। অগ্রিম রেট বেঁধে আদায় করছেন ঘুষের টাকা।ফলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের উদ্ধতন কর্মকর্তা এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় । ছাত্র জীবনে তিনি ঢাকা ইউনিভার্সিটি ছাত্রলীগের হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন । ছাত্রলীগের ক্যাডার হিসেবে এমন কোন অপকর্ম নেই যা তিনি করেননি। সেই সুবাদে অতি সহজেই বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের নেতাকর্মীদের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। রাজনীতিক তদবীরে ৩১তম বিসিএস ক্যাডার নির্বাচিত হয়ে খাদ্য কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগদানের সাথে সাথেই নানা অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন । তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে জুনিয়র হলেও সিনিয়রদের টপিকিয়ে সুবিধাজনক জায়গায় পোস্টিং নিয়েছেন । কাজী সাইফুদ্দিন নিজেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফুফাতো ভাই শেখ তাপসের চাচাতো ভাই পরিচয় দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে ব্যাপক আধিপত্য বিস্তার করেছেন। তখন অফিস ফাঁকি দিয়ে বেশিরভাগ সময় শেখ তাপসের অফিসের সময় কাটাতেন।খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন ওএমএস-এর চাল-আটা লুটপাট চালিয়েছে।

বর্তমানে মহামান্য হাইকোর্টে চলমান ওএমএস ডিলারদের করা মামলা যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে খুলনা খাদ্য বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের জন্য। বিশেষ করে কাজী সাইফুদ্দিন দুর্নীতিবাজদের জন্য এটি যেন হয়ে উঠেছে আলাদিনের চেরাগ।
সূত্র বলছে, নগরীর প্রতিটি ওএমএস পয়েন্টে নামমাত্র চাল-আটা বিতরণ করা হয়, বাকি অংশ কালোবাজারিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এসব পয়েন্ট থেকে উঠে আসছে এক ভয়ানক অভিযোগ—প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে তোলা হয় ডিসি ফুডের জন্য

খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য পরিদর্শক ইকবাল বাহার চৌধুরী ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন এর বদলী আদেশ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন খুলনা খাদ্য বিভাগের ডিলার ও খাদ্য পরিদর্শকেরা।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর