ধর্ম উপদেষ্টা ড. অ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘পাগলা মসজিদের আয়তন ৫ দশমিক ৫ একর। আরও কিছু জায়গা ক্রয় করা হবে। খুব শিগগিরই দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদের ১০ তলা ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হবে। মানুষের দানের টাকায় আধুনিক তুরস্কের মসজিদগুলোর আদলে বহুমুখী কার্যক্রম সম্পাদনের উপযোগী দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে।’
রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের এক জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, কমপ্লেক্সে এতিমদের জন্য লেখাপড়ার ব্যবস্থা, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়া, আইটি সেকশন থাকবে। এসব নিয়ে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি কমিটি কাজ করছে। এরইমধ্যে কমপ্লেক্সের জন্য ১২টি প্রতিষ্ঠান ডিজাইন জমা দিয়েছে। তার মধ্যে রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষজ্ঞ টিম পরীক্ষা করে একটি প্রতিষ্ঠানকে মনোনয়ন দিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের মধ্যেই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, পাগলা মসজিদে ৯০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এফডিআর হিসেবে রাখা আছে, যা থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ গরিব, অসহায়, অনাত ও অসুস্থদের জন্য ব্যয় করা হয়। এরইমধ্যে প্রায় ৮০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। আজ আমি প্রস্তাব করেছি— স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দরিদ্র শিক্ষার্থীদেরও এ তহবিল থেকে সহায়তা দেওয়া হোক। এতে শিক্ষার সুযোগ বাড়বে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু মাজারে হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট রয়েছে। মাজার, মসজিদ, মাদ্রাসা বা এতিমখানায় হামলা চালালে বা ধ্বংসের চেষ্টা করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমি আন্তঃমন্ত্রণালয় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য। এসব বিষয় প্রতিমাসে আলোচনায় আসে। প্রতিটি মাজার ও মসজিদ কর্তৃপক্ষকে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর অনুরোধ করছি। এতে হামলাকারী চিহ্নিত করা সহজ হবে। তবে সামাজিক সচেতনতা সবচেয়ে জরুরি। প্রতিটি মাজারে পুলিশ মোতায়েন সম্ভব নয়, তাই সর্বস্তরের মানুষকে এসব ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তায় অংশ নিতে হবে। এরইমধ্যে বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং কিছু ব্যক্তি গ্রেপ্তারও হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্দিষ্ট মামলার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবে এবং হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এর আগে সকালে কিশোরগঞ্জ সদরের মারিয়া ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া এলাকায় নির্মাণাধীন জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্স কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরে পাগলা মসজিদ ঘুরে দেখে মসজিদ কমিটির সাথে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। দুপুরে আল জামিয়াতুল এমদাদিয়ায় ইসলামি অর্থনীতির গুরুত্বে শীর্ষক আলোচনা সভায় যোগদান করেন। সেখান থেকে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশে যাত্রা করার কথা রয়েছে।
এ সময় জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইমরানুল ইসলাম, আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা শিব্বির আহমদসহ মসজিদ কমিটির সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।