জুলাই-আগস্টের শিক্ষার্থী ও জনতার আন্দোলনের সময় হঠাৎই আলোচনায় আসে একটি গান ‘কথা ক’। আন্দোলনের ঢেউয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বারবার বাজতে থাকে এই হিপহপ র্যাপ। গানটির শিল্পী র্যাপার সেজান, যিনি তখন প্রশংসা পান সাহসী কণ্ঠস্বর হিসেবে।
তবে এক বছর না যেতেই, সেই আন্দোলনকে ঘিরেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন সেজান। ২৭ জুলাই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে তিনি লেখেন “জুলাই আন্দোলন সম্পর্কিত যে কোনো শো-এর ব্যাপারে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না।”
পোস্টে তিনি ব্যাখ্যা করেন, জুলাই-আগস্টের সময়টায় যখন আন্দোলনের পক্ষে প্রথম দাঁড়ায় কেউ, তখন ছিল হিপহপ কমিউনিটির তরুণ র্যাপাররাই। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় গ্রাফিতি আর্টিস্টরাও। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আয়োজনগুলো থেকে হিপহপ ও র্যাপারদের প্রায় বাদই দেওয়া হয়েছে।
সেজান লেখেন, “অনেক জায়গায় পারফর্ম করলেও সেটা যেন জোর করে ঢুকে পড়ার মতো। হিপহপ এখন আর কোনো ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ ধারা নয়, এটা মূলধারার অংশ। কিন্তু এখনো সম্মান এবং সম্মানী- দুটোর অভাব রয়ে গেছে।”
তার অভিযোগ, কোথাও কোথাও শিল্পীদের ‘নামমাত্র সম্মানী’ দিয়ে ডাকা হয়, যেখানে অন্য ব্যান্ড বা মেইনস্ট্রিম শিল্পীরা পান পুরোপুরি প্রাপ্য মর্যাদা।
পোস্টে সেজান আরও স্পষ্ট করে দেন, কিছু নির্দিষ্ট শোতে অংশ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও, এরপর থেকে তিনি কেবল এমন আয়োজনে যাবেন যেখানে ‘প্রোপার লাইনআপ’ মেইনটেইন করা হবে।
তিনি লেখেন, “যেসব শোগুলোতে আমি কথা দিয়েছি, সেগুলো শেষ করার পর যদি আমাকে ডাকেন, তাহলে ঠিকভাবে শিল্পীদের প্রটোকল ও সম্মান নিশ্চিত করবেন। নইলে দয়া করে আমার এবং আপনার সময় নষ্ট করবেন না।”
পোস্টের একদম শেষে সেজান তুলে ধরেন তার শিল্পীসত্তার অহংকার “ক্ষ্যাপা গানের আর্টিস্ট আমরা, ক্ষ্যাপ আর্টিস্ট না। রেস্পেক্ট ছাড়া যারেই পাবি, র্যাপ আর্টিস্ট না।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গড়ে ওঠে, সেখানে সেজানের গান ‘কথা ক’ আন্দোলনের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠে। গানটি ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে উঠে এসেছিল দ্বিতীয় নম্বরে, আর সেই থেকে আন্দোলনের প্রতীকী র্যাপ হিসেবে জায়গা করে নেয় সচেতন তরুণদের মুখে মুখে।