নওগাঁয় প্রবাসে থাকা স্বামীকে তালাক দিয়ে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা-স্বর্ণালংকার নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন চাঁদনী বানু নামের এক প্রবাসীর স্ত্রী। এসময় প্রবাসী স্বামী নুরুল ইসলামের পাঠানো নগদ ৩০ লাখ টাকা ও ১৩ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে আত্মগোপনে যান চাঁদনী বানু।
এ ঘটনায় সম্প্রতি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম। ঘটনাটি ঘটে সদর উপজেলার দোগাছী পাথরকুটা গ্রামে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ বছর আগে দোগাছী (পাথরকুটা) গ্রামের মৃত সফির উদ্দিনের ছেলে প্রবাসী নুরুল ইসলামের সঙ্গে একই গ্রামের মোস্তাকিমের মেয়ে চাঁদনী বানুর বিয়ে হয়। সংসার জীবনে তাদের একটি পুত্র সন্তান জন্ম হয়। স্ত্রী-সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে বিদেশে কাজ করতে যান নুরুল ইসলাম। এরপর প্রবাসে থেকে স্বামী নুরুল ইসলাম জমি কেনার জন্য তার স্ত্রীকে টাকা পাঠালে ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর ৫ শতক এবং ওই বছরের ১৬ এপ্রিলে আরও ৩ শতক জমি ক্রয় করে নিজের নামে নামজারি করে নেয় স্ত্রী চাঁদনী বানু।
পরে স্বামী নুরুল ইসলামের নামে রেজিস্ট্রার করে দিতে চাইলেও দেশে আসার পর জমি রেজিস্ট্রার করে দিতে কালক্ষেপণ করতে থাকে।
এদিকে নুরুল ইসলাম লোক মারফতে জানতে পারেন তার স্ত্রী পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হয়েছেন। বিষয়টি জানার পর তার স্ত্রীকে বাঁধা প্রদান করেন এবং পুনরায় প্রবাসে যান স্বামী। স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী চাঁদনী বানু আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে৷ আস্তে আস্তে স্বামীর পাঠানো নগদ ৩০ লাখ টাকা, আনুমানিক মূল্য ১৩ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার, ৮শতক জমির দলিল এবং দুটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান স্ত্রী।
এরপর স্বামী দেশে ফিরে তার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মুঠোফোনে বন্ধ পায়। ঘটনার পর থেকে ব্যাপক হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন স্বামী নুরুল ইসলাম। পরে আইনি সহায়তার জন্য ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে স্ত্রীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম জানান, আমি বিদেশে রোজগার করে টাকা পয়সা শুধু তার কাছে পাঠিয়েছি৷ কিন্তু সে যে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত ছিল এটা আমার জানা ছিল না। জানার পর তাকে একাধিক বার নিষেধ করেছি। কয়েকমাস আগে আমাকে তালাক নোটিশ পাঠালে দেশে ফেরার পর কাগজটি হাতে পাই। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ পাচ্ছি। স্ত্রীর পরিবারে যোগাযোগ করলে তারা কিছু বলে না। নিরুপায় হয়ে থানা পুলিশের সাহায্য নিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না।
অভিযুক্ত চাঁদনী বানুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে নওগাঁ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।