শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন

পরি/চয় মিলেছে কারা/গারে বন্দি আ/শা বানুর, দেওয়া হলো পি/তার জি/ম্মায়..

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫
  • ২১ বার পঠিত হয়েছে
কারাগার থেকে মুক্তির পর বাবার সঙ্গে আশা বানু। ছবি : Max tv bd

স্বামী তালাক দেওয়ার পর সন্তান ছেড়ে যন্ত্রণায় ভেঙে পড়েছিলেন ২৩ বছরের আশা বানু। একসময় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে নওগাঁয় বাবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন অজানার পথে। ঘুরতে ঘুরতে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা গহোমাবোনা এলাকায় পৌঁছেন তিনি। তাকে ভারতীয় ভেবে স্থানীয়রা বিজিবির হাতে তুলে দেন। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আশা বানু তখন কোনো কথা বলতে পারছিলেন না। পুলিশ তাকে ভারতীয় বলে ধরে নিয়ে অনুপ্রবেশের মামলা করে। গত ১৭ মে আদালত তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান।

কারাগারে গিয়ে আশা বানুর মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে; কর্তৃপক্ষের আন্তরিক চেষ্টায় দেড় মাস পর তিনি কথা বলেন।

তিনি জানান, তিনি ভারতীয় নন, বাংলাদেশের নাগরিক। নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার হাকিমপুর গ্রামে তাদের বাড়ি। তার বাবার নাম মীর মোস্তাফিজুর রহমান, মা ফরিদা বেগম।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহ আলম খান Max tv bdকে বলেন, প্রথমে মেয়েটি একেবারেই চুপ ছিলেন, কোনো কথাই বলতেন না। ধীরে ধীরে তার আস্থা গড়ে তোলা হয়। একপর্যায়ে তিনি নিজের নাম বলেন। জানান বাবার নাম ও ঠিকানাও। এরপর তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে কারাগারে ডেকে নেওয়া হয়। শনাক্তে যেন ভুল না হয়, সেজন্য মেয়েটিকে কয়েকজনের মাঝে রাখা হয়। বাবার ছবিও প্রথমে মেয়েটিকে দেখানো হয়। উভয়েই পরস্পরকে চিনতে পারেন।

আশা বানু কারা কর্তৃপক্ষকে জানান, ঢাকায় একটি গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করতেন তিনি। তার ১০ বছরের একটি ছেলে আছে। ২০২২ সালে স্বামী তাকে তালাক দেন এবং সন্তানকে নিজের কাছে রেখে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তখন তিনি বাবার বাড়িতে চলে যান। এর পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন আশা। হঠাৎ একদিন বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন।

কেন তিনি হঠাৎ বাড়ি থেকে বের হলেন, তা জানতে চাইলে আশা বানু বলেন, মনে হইছিল ঢাকায় যামু। চাকরি পাইতে পারি কি না দেহমু। কিন্তু পরে আর কিছু মনে ছিল না।

কারাগারের সামনে আশা বানুর বাবা বলেন, মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে তিনি থানায় জিডি করেছিলেন। পরিচিত ব্যক্তিদের দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেছেন, কিন্তু কোনো খোঁজ পাননি। শেষ পর্যন্ত মেয়েকে খুঁজে পেয়েছেন কারাগার থেকে।

কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় কারা কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আশা বানু বলেন, কারাগারে আমি ভালোই ছিলাম। কিন্তু এখন বাড়ি যাইতে হবে, অনেক দূর। আমার বাবাও দুপুরে কিছু খাননি। তাকেও খাওয়াইতে হবে।

আদালতে দেওয়া পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই নারী ভারতে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। তাকে ১৯৫২ সালের বাংলাদেশ কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্টের ৪ ধারায় আটক করা হয়।

জেল সুপার Max tv bdকে জানান, বাবা-মেয়ের পুনর্মিলনের মুহূর্তটি ছিল অত্যন্ত আবেগঘন। কারাগারে উপস্থিত সবাই সেদিন চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। এরপর দ্রুত আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনায় নিয়ে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে কারাগার থেকে মুক্তি পান আশা বানু।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর