রাজশাহীতে ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি এবং অনিয়ম রোধে কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটির (সিসিএস) উদ্যোগে পরিচিত ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২১ জুন) বিকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনের ফোকলোর গ্যালারিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সিসিএস-রাজশাহী জেলার কো-অর্ডিনেটর ও দৈনিক Max tv bdর রাজশাহী ব্যুরোপ্রধান আমজাদ হোসেন শিমুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল আলিম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ইব্রাহিম হোসেন। সিসিএস রাজশাহী মহানগরীর সদস্য রায়হান রোহানের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সিসিএসের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কো-অর্ডিনেটর আসলাম-উদ-দৌলা ও কনজ্যুমার ইয়ুথ বাংলাদেশের (সিওয়াইবি) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মো. মুরাদ হোসেন।
এসময় ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ভোক্তা অধিকার আইনের মূল উদ্দেশ্য কোনো ভোক্তা প্রতারণার শিকার হলে তার ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেওয়া এবং অনিয়মকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। শুধু ভোক্তা অধিকার আইন নয়, পাশাপাশি অন্যান্য প্রাসঙ্গিক আইন সম্পর্কে জ্ঞান রাখাও সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সিসিএস একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তাই আপনাদের দায়িত্ব এ বিষয়ে নিজেরা সচেতন থাকা ও অন্যকে সচেতন করা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল আলিম বলেন, আমরা যারা ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করি, তা মূলত মানবাধিকার রক্ষা করারই অংশ। আমরা এক ধরনের দুর্নীতিগ্রস্ত পরিবেশের সাথে অভ্যস্ত হয়ে গেছি যেখানে খাদ্যে ভেজাল, ওজনে কম দেওয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বিক্রি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার পরিবেশন ইত্যাদি ব্যাপকভাবে বিদ্যমান। এটি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ভয়াবহ হুমকি।
তিনি আরও বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের অধিকার নিয়ে সচেতন না হব ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের অধিকার কেউ দিয়ে যাবে না। অধিকার আমাদের আদায় করতে হবে এবং সকলকে সচেতন করতে হবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নৈতিকতা বৃদ্ধি করতে পারলে এসব সমস্যা অনেকাংশে কমে আসবে। তাই আমাদের উচিত, নিজে সচেতন হওয়া এবং অন্যদের সচেতন করা।
অনুষ্ঠানে রাজশাহী জেলা ও মহানগরীর ২১টি থানা ও উপজেলার সিসিএস প্রতিনিধিরা নিজ নিজ উপজেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে করণীয় বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিএস-রাজশাহী জেলার দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সাংবাদিক অংশ নেন।
উল্লেখ্য, কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি (সিসিএস) ১৩ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে। সিসিএস ও এর অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে এ পর্যন্ত সভা-সেমিনার, লিফলেট বিতরণ, আইনি পদক্ষেপ, মানববন্ধন, সম্মেলন, ওয়ার্কশপ, ভেজালবিরোধী তদারকি, জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের কাজে সহায়তাসহ অন্তত তিন শতাধিক বিভিন্ন ইভেন্ট সম্পন্ন করেছে।
সিসিএস ও এর অঙ্গসংগঠনের বর্তমানে ৮৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবী ও ৫২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি রয়েছে। এ ছাড়া লক্ষাধিক স্বেচ্ছাসেবী দেশের প্রায় সকল জেলা ও থানায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সিসিএস জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করেও বিভিন্ন কার্যক্রম করে থাকে।