রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন

ঈদে হাট কাঁ/পাতে আসছে ‘লা/লু সর্দা/র’ ও ‘কা/লিয়া’

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫
  • ১৪ বার পঠিত হয়েছে
প্রাকৃতিক উপায়ে লালিত হওয়ায় ‘কালিয়া’র খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় হাট-বাজারে। ছবি : Max tv bd

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার এবারের পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে দুটি ব্যতিক্রমী কোরবানির ষাঁড়—‘লালু সর্দার’ ও ‘কালিয়া’। বিশাল আকৃতি, স্বাস্থ্যবান গঠন এবং সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে লালিত হওয়ায় ইতোমধ্যেই এই ষাঁড় দুটির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় হাটবাজার থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

এই দুটি ষাঁড় লালনপালন করছে নিশ্চিন্তপুর গ্রামে খামার ‘এম এইচ বি এম এগ্রো’, যার কর্ণধার মেহেদী হাসান বাবু মিয়াজী। তিনি জানান, কোনো প্রকার কৃত্রিম হরমোন বা ওষুধ ছাড়াই দেশীয় পদ্ধতিতে এবং প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে পশুগুলোর পরিচর্যা করা হয়েছে। গরুগুলোর প্রতি রয়েছে সন্তানের মতো ভালোবাসা। খামারে প্রতিটি গরুর দেখভাল করা হয় নিবিড়ভাবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সম্পূর্ণ মানবিক পদ্ধতিতে।

লাল রঙের ‘লালু সর্দার’ ও কালো রঙের ‘কালিয়া’ দুটিই হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়। ‘লালু সর্দার’-এর ওজন প্রায় ১২ থেকে ১৩ মণ। গত কোরবানিতে হাটে উঠলেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় বিক্রি করা হয়নি। এবার তার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, ‘কালিয়া’-এর ওজন প্রায় ১৪ থেকে ১৫ মণ। এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মালিক বাবু মিয়াজী জানান, আকাশছোঁয়া দাম চেয়ে লাভ নেই। আমি ফিক্সড দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। মতলব উত্তর উপজেলার ভেতরে কেউ কিনলে বাড়ি পর্যন্ত ফ্রি ডেলিভারি দিচ্ছি।

‘লালু সর্দার’ ও ‘কালিয়া’ ছাড়াও বাবু মিয়াজীর খামারে রয়েছে আরও দুটি বিশাল গরু—‘সুন্দর আলী’ ও ‘কালো বীর’। প্রতিটি গরুই রয়েছে আকর্ষণীয় দৈহিক গড়ন ও স্বাস্থ্য। এসব গরুর ছবি ও ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

খামারি মিয়াজী জানান, আমার পূর্বপুরুষরাও গরু মোটাতাজাকরণে যুক্ত ছিলেন। আমি ২০০৭ সাল থেকে এই পেশায় আছি। এই ব্যবসায়ে লাভ যেমন হয়েছে, তেমনি কিছু বছর লোকসানও গুনতে হয়েছে। তবে এবারের ঈদে আমার খামারের গরুগুলো খুবই চমৎকার। আমি আশাবাদী, ন্যায্যমূল্যে এগুলো বিক্রি হবে।

খামার পরিদর্শনে আসা স্থানীয় বাসিন্দা মো. বাবুল মুফতী বলেন, আমি প্রতিবার কোরবানির আগে বিভিন্ন খামার ঘুরি, কিন্তু এবারের ‘লালু সর্দার’ ও ‘কালিয়া’ দেখে সত্যি অবাক হয়েছি। এমন গঠন আর পরিচর্যা মতলবে খুব কমই দেখা যায়। দামটাও তুলনামূলকভাবে যথাযথ মনে হয়েছে।

আরেক দর্শনার্থী গজরা ইউনিয়নের আমুয়াকান্দি গ্রাম থেকে আসা ইসমাইল খান টিটু জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেখে খামারে এসেছিলাম। গরুগুলো একেবারেই ভিন্ন রকম। সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে, কোন ধরনের হরমোন ছাড়া গরুগুলো বড় করা হয়েছে।

চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ‘এম এইচ বি এম এগ্রো’ খামারের ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ শুধু পশু পালনেই নয়, সচেতন ও মানবিক কোরবানির বার্তাও ছড়িয়ে দিচ্ছে। গরু যেন শুধুই ব্যবসার পণ্য নয়, বরং সঠিক পদ্ধতিতে পালন করে তা হতে পারে গর্বের প্রতীক।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর