টাঙ্গাইলে জমে উঠেছে দেড়শ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা। এ মেলায় জামাই ছাড়াও সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকাল থেকে সদর উপজেলার রসুলপুর বাছিরননেছা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তিন দিনব্যাপী এ মেলা শুরু হয়। মেলা চলবে রোববার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা পর্যন্ত।
জানা গেছে, প্রায় দেড়শ বছর ধরে সনাতন পঞ্জিকা অনুসারে প্রতিবছর ১১, ১২ ও ১৩ বৈশাখ রসুলপুরে তিন দিনব্যাপী জামাই মেলা বসে। মেলাকে কেন্দ্র করে কালিহাতী, ভূঞাপুর, ঘাটাইল ও সদর উপজেলার আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মেয়েরা তাদের স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন। মেলা উপলক্ষে জামাইকে বরণ করে নেওয়ার জন্য শ্বশুর-শাশুড়িরাও বেশ আগে থেকেই নেন নানা প্রস্তুতি। এ ছাড়া মেয়ের জামাইরা মেলা থেকে শ্বশুরবাড়ির জন্য বিভিন্ন কেনাকাটা করেন।
জামাই মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দোকানিরা বসেছেন বিভিন্ন পণ্য নিয়ে। দোকানে বিভিন্ন ধরনের খেলনা, প্রসাধনী, খাবারের দোকান, মিষ্টির দোকানসহ ছোট-বড় দোকান বসেছে। মেলায় হাজারো মানুষের ঢল নামলেও মেলায় আসতে পেরে খুশি দর্শনার্থীরা।
মিলন মাহমুদ নামের এক দর্শনার্থী বলেন, মেলাটি জামাই মেলা নামে পরিচিত। মেলাটিকে কেন্দ্র করে এ এলাকার জামাইরা একত্রিত হয়। এমন মেলায় আসতে পেয়ে খুবই আনন্দিত।
তিনি আরও বলেন, আমার একটি মাত্র বোন। বছরে একরার আসে এ জামাই মেলাকে কেন্দ্র করে। গতবার মেলায় জামাই আসতে পারেনি। এবার তিনি এসেছেন।
রসুলপুরের জামাই স্বপ্ন মন্ডল বলেন, গতবার আসতে পারিনি। এবারের মেলাতে প্রথম দিন আসিনি। আজ দ্বিতীয় দিন সকালে এসেছি। শ্বশুরবাড়ি এসে বিকেলে মেলায় আসছি। শ্বশুরবাড়ির বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন জিনিস কিনেছি। পরে মাছ এবং মিষ্টি কিনে নিয়ে যাব। আমার শাশুড়ি মেলায় আসার সময় দুই হাজার টাকা দিয়েছেন।
মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান বলেন, মেলা সফল করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন দোকানিরা। তারা খাবারের দোকান, মিষ্টি জাতীয় পণ্যের দোকানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খেলনা, প্রসাধনীর দোকানও দিয়েছে। রসুলপুরের এ মেলাটি বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম। আজ সন্ধ্যায় এ মেলা শেষ হবে। তিন দিনে মেলায় দুই কোটি টাকারও বেশি বাণিজ্য হবে বলে আশা করছি।