শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন

স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে চিকিৎসকের বাড়ির সামনে নারী..

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২৮ বার পঠিত হয়েছে
ডা. ফারহান তানভীর ও ভুক্তভোগী নারী। ছবি : সংগৃহীত

ফেসবুক পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে নারী চিকিৎসককে বিয়ে করেও স্ত্রীর মর্যাদা দিচ্ছেন না ফারহান তানভীর (৩৩) নামে আরেক চিকিৎসক। অভিযুক্ত চিকিৎসকের বাসার সামনে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েও নারী চিকিৎসক পাননি কোনো সুরাহা। তিনি এখন অন্তঃসত্ত্বা।

গত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফরিদপুর জেলা শহরের ঝিলটুলি এলাকার অসিত্ত্ব টাওয়ারের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে ওই নারী চিকিৎসক স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে ২০-২৫ মিনিট একা দাঁড়িয়ে ছিলেন। প্ল্যাকার্ডটিতে ডা. ফারহান তানভীর নামে এক চিকিৎসকের ছবিসংবলিত, নিচে লেখা ছিল ‘ডা. ফারহান তানভীর আমার স্বামী, আমি আমার ন্যায্য অধিকার চাই, স্ত্রী হিসেবে মর্যাদা চাই’।

ডাক্তার এসএম ফারহান তানভীর ফরিদপুর জেলার মধুখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এমবিবিএস পাস করেন। ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলি এলাকার অ্যাডভোকেট মো. আক্কাস আলী মিয়ার ছেলে তিনি। তিনি ঝিলটুলির অসিত্ত্ব টাওয়ারের লিফটের ৪ তলায় ৫-এর ডিতে থাকেন।

অপরদিকে ডা. ফারহান তানভীরের স্ত্রী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসকের বাড়ি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর গ্রামে। তিনি বগুড়া মেডিকেল থেকে ২০১৮ সালে এমবিবিএস শেষ করে ঢাকা মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত।

ফারহান তানভীরের সঙ্গে গত ২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে ফেসবুকে পরিচয় হয় ওই নারীর। আর সেই সূত্র ধরে তারা দুজন হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলতে থাকেন, অতঃপর দীর্ঘ ৫ মাসে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। পরে বিয়ের আশ্বাস দেওয়া হলে ঘটনাটি গড়ায় শারীরিক সম্পর্কে। এরই মধ্যে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি তানভীর ওই নারীকে কক্সবাজার নিয়ে যান। সেখানে তাদের বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। তানভীর ১৮ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা বাঙালিয়ানা রেস্টুরেন্টে পারিবারিকভাবে অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী চিকিৎসককে বিয়ে করেন।

ভুক্তভোগী বলেন, শহরের টেপাখোলার হোটেল বাঙালিয়ানাতে ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হলেও তাৎক্ষণিকভাবে আমাকে ওই বাড়িতে উঠিয়ে নেননি তানভীরের পরিবার। এ নিয়ে তখনি তাদের সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়। কিন্তু শেষমেষ উপায় না পেয়ে আমি ও আমার পরিবার সেখান থেকে চলে আসি। এরপর তানভীর আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ফারহানের ঝিলটুলির বাসায় গিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হই। ৯৯৯-এ কল দেওয়াতে থানা থেকে একটা টিম গিয়ে আমাকে রেসকিউ করে নিয়ে যায়। সেদিন আমি রাত ১১টা পর্যন্ত থানায় অপেক্ষা করি এবং এর মাঝে হাসপাতাল থেকেও চিকিৎসা নিয়ে আসি। যার ডকুমেন্ট আমার কাছে আছে এবং থানার সিসি ক্যামেরা চেক করলে সব ঘটনা পাওয়া যাবে।

তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘এত টাইম অপেক্ষা করার পরেও থানার ওসির সঙ্গে আমি দেখা করতে পারিনি। ওসি আমার সাথে দেখা না করে আমার বাবাকে কল দেন। বাবাকে আসতে বলেন থানায় মীমাংসা করার জন্য। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমার বাবা গত ২৫ ফেব্রুয়ারি যান এবং আমরা থানায় যাই ২টার দিকে। ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর ওসির সঙ্গে আমার বাবা ও মামা দেখা করেন এবং তাদের বলেন মীমাংসা করার কথা। তখন ওসি আমার বাবা-মামাকে বলেন, এই বিষয়ে তিনি আর কোনো কথা বলতে ইচ্ছুক না। মামলা করার কথা বলাতেও তিনি মামলা নিতে চাননি। এরপর আমি স্ত্রীর মর্যাদার দাবি করে ডাক্তার ফারহান তানভীরের বাড়ির সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেই।’

অ্যাডভোকেট মো. আক্কাস আলী মিয়া বলেন, আমি বক্তব্য কেন দেব…? আমি কাবিনের সময় ছিলাম না।

ডা. ফারহান তানভীরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করে না পেয়ে মধুখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলেও তার দেখা পাওয়া যায়নি। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, তিনি তিন দিনের ছুটিতে আছেন।

এদিকে অন্তঃসত্ত্বা নারী চিকিৎসকের লিখিত অভিযোগ না নেওয়া প্রসঙ্গে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি আসাদ উজ্জামান Max tv bdকে জানান, ওই মেয়ে আসেনি আমার কাছে। আমি বরং তাদের দুপক্ষের গার্জিয়ানকে ফোন দিয়েছিলাম মীমাংসার জন্য।

ফরিদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাহ্‌মুদুল হাসান Max tv bdকে বলেন, ঘটনাটি আপনার থেকে প্রথম শুনলাম। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাব। তদন্ত করে দেখা হবে বিষয়টি, সত্যতা পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব তার বিরুদ্ধে।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর