চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আশিকুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত। তার বাঁ পাশের কাঁধের নার্ভ ড্যামেজ এবং ডান হাতসহ শরীরের ডান দিক প্যারালাইজড হয়ে আছে। অর্থাভাবে নিয়মিত চিকিৎসা না চালাতে পেরে তার বাম হাত অনেক শুকিয়ে যায় এবং শরীরের সার্বিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এমতাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শক্রমে তিনি দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে চান। কিন্তু হতদরিদ্র পরিবারের পক্ষে প্রয়োজনীয় অর্থ জোগান দেওয়া সম্ভব নয়।
জানা গেছে, গত দেড় বছর আগে আশিক প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়। পরে চট্টগ্রাম পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গেলে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডাক্তার তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেন। প্রথম কয়েকমাস ওষুধ সেবন করতে পারলেও পরে আর্থিক সমস্যার কারণে নিয়মিত চালিয়ে যেতে পারেননি তিনি।
আশিকের সহপাঠী চবির সমাজতত্ত্ব বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তনজিহা বিনতে কবির বলেন, ‘তিনি দেড় বছর যাবৎ প্যারালাইজ রোগে আক্রান্ত। চরম আর্থিক অবস্থার কারণে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারেনি। ফলে তার ডান হাত অনেক শুকিয়ে গিয়েছে। আমাদের সবার একটু সহযোগিতায় তাকে একটি সুস্থ জীবন ফিরিয়ে দিতে পারে। তাই আমরা আপনাদের সবার সহযোগিতা কামনা করছি।”
এ বিষয়ে আশিক বলেন, ‘দেড় বছর আগে আমার ডান হাতে প্রচণ্ড ব্যথা দেখা দিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হই। প্রয়োজনীয় টেস্ট দিলে ডাক্তার জানান বাঁ কাঁধের নার্ভ ড্যামেজের দিকে। কয়েকমাস ওষুধ চলে কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে নিয়মিত চালিয়ে যেতে পারিনি। পরে আমার সমস্যা আরও বাড়তে থাকে। বাম পাশের কাঁধের নার্ভ ড্যামেজ এবং ডান হাতসহ শরীরের ডান দিক প্যারালাইজড হয়ে যায়। বর্তমানে ডান হাত অনেকটাই শুকিয়ে গেছে। এ হাতে তেমনকিছু নিতে পারি না। অনেক দুর্বল অবস্থায় আছি। এখন বাসায় অবস্থান করছি।”
তিনি বলেন, ‘আমার বাবা একজন দিনমজুর। তিনি ঘরের চাল বুনার কাজ করেন। এতদিন তিনি আমার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ করেছেন। বর্তমানে তার পক্ষে আর সম্ভব নয়।’
এমতাবস্থায় জীবন বাঁচাতে দেশের সহৃদয়বান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আশিক।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার তুষার মালিয়াট গ্রামের মো. আরিফুল ইসলামের সন্তান আশিক। দুই ভাইবোনের মধ্যে আশিক বড়। ছোটবোন স্থানীয় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবা পেশায় একজন দিনমজুর ও মা গৃহিণী। গতবছর ঘরের চাল থেকে পড়ে মায়ের হাত ভেঙে যায়। বর্তমানে তিনিও ঠিকমতো কাজ করতে পারেন না।