রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৮ অপরাহ্ন

‘বউ মেলায়’ নারীদের ভিড়..

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৩০ বার পঠিত হয়েছে
বউ মেলায় ক্রেতাদের ভিড়। ছবি : Max tv bd

মেলার নাম ‘বউ মেলা’। যে মেলায় কেনাকাটা করেন মেয়েরা, বিক্রেতাও মেয়েরা। ছোটবড় সব বয়সী মেয়েরাই এখানে বেচাকেনা করেন। এজন্য মেলার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বউ মেলা’।

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের পোড়াদহ মেলার দ্বিতীয় দিন বসে ‘বউ মেলা’। সকাল থেকেই এলাকার নানা বয়সী মেয়েরা কেনাকাটার জন্য আসতে থাকেন। দুপুরের দিকে মেলা পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে ক্রেতাদের পদভারে।

মেলায় আগত জরিনা, মমতা, আকলিমা বেগম জানান, তারা প্রতি বছর নিজেদের ব্যবহারের জন্য কসমেটিক্স ও ইমিটেশনের গয়না কেনেন এই মেলায়। এবারও এসেছেন। তবে এবার দাম কিছুটা বেশি। মেলায় চুড়ি, ফিতা, দুল, মালা, আংটিসহ সব ধরনের ইমিটেশন রয়েছে। বিক্রেতা আলেয়া, খাদিজা বেগম জানান, বেচাবিক্রি খুব ভালো।

বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পূর্বে গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের গোলাবাড়ি বাজার সংলগ্ন ইছামতি নদীর শাখা গাড়িদহ খালের তীরঘেঁষে প্রায় ৪০০ বছর আগে থেকে মাঘ মাসের শেষ বুধবার সন্ন্যাসী পূজা উপলক্ষে বসে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা। বিশাল আকৃতির মাছের জন্য বিখ্যাত এ মেলা উপলক্ষে আশপাশের ২০টি গ্রামের বাড়িতে শুরু হয় উৎসব। প্রতিটি বাড়িতে নতুন বউ-জামাই যেমন আসেন, তেমনি পুরোনো আত্মীয়স্বজনও কেউ বাদ পড়েন না। কিন্তু সেসব আত্মীয়স্বজনের মধ্যে শুধু পুরুষরাই পোড়াদহ মেলায় যাওয়ার সুযোগ পান। নিরাপত্তা এবং বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় মেলায় নারীরা প্রবেশ করতে পারেন না। এ অবস্থায় নারীদের নিয়ে এই মেলার আয়োজন করা হয় ২০ বছর আগে। এরপর থেকেই পোড়াদহ মেলার পরদিন এ মেলা বসছে। নারীদের জন্য আয়োজন করা মেলাটি এখন পরিচিতি পেয়েছে ‘বউ মেলা’ হিসেবে।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই ত্রিপল ও সামিয়ানা টানিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন দোকানিরা। মেয়েদের প্রসাধনী সামগ্রীই মেলার প্রধান উপজীব্য হলেও তার সঙ্গে স্থান পায় ছোটদের খেলনা সামগ্রী আর গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় সামগ্রী। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ভিড় জমাতে শুরু করেন নারী ও শিশুরা।

দোকানিরা জানান, মেলায় নারীরাই যেহেতু ক্রেতা, তাই প্রসাধনী সামগ্রীই সেখানে বিক্রি হয় বেশি। নারীদের প্রসাধনীর পাশাপাশি শিশুদের খেলনার বিক্রিও ভালো বলে জানান তারা।

মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি ও মহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ মণ্ডল জানান, পোড়াদহ মেলা উপলক্ষে এখানকার বাসিন্দাদের রেওয়াজ হয়ে উঠেছে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের নিমন্ত্রণ জানিয়ে খাওয়ানো। কিন্তু সেসব স্বজনের মধ্যে যেসব নারী আসেন, তারা মেলায় যেতে পারেন না বলে বিষয়টি খুবই পীড়াদায়ক ছিল। এ কারণেই মূলত বউ মেলার আয়োজন করা। এখানে যেসব পুরুষ মানুষ সঙ্গে আসছেন তারা নিজেদের ইচ্ছায়ই মেলার ভেতরে ঢোকেন না।

গাবতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিক ইকবাল জানান, ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর অবস্থানে ছিল পুলিশ। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সার্বক্ষণিক পুলিশের টহল জোরদার করা হয়।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর