বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০৯ পূর্বাহ্ন

৪ বছরেও খোলেনি কসবা সীমান্ত হাট, হতাশ ব্যবসায়ীরা..

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৪০ বার পঠিত হয়েছে
কসবা সীমান্ত হাট। ছবি : Max tv bd

মহামারি করোনার কারণে বন্ধ ঘোষণার পর থেকে দীর্ঘ সাড়ে চার বছরেরও বেশি সময় বন্ধ রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার তারাপুর-কমলাসাগর সীমান্ত হাট। করোনার পর অন্য হাটগুলো চালু হলেও এই সীমান্ত হাটটি এ পর্যন্ত চালু না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা হতাশ। ভারতীয় ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের কাছে বকেয়া রয়েছে প্রায় কোটি টাকা। এই হাটটি পুনরায় চালু হলে টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হাটটি দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবি তাদের।

জানা যায়, ২০১৫ সালের ১১ জুন ভারত-বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে ভারতের সিপাহীজলা জেলার কমলাসাগর ও বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় উদ্বোধন হয় কসবা সীমান্ত হাটের। দুই দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও বৈধভাবে দুই দেশের বিভিন্ন পণ্য বেচাকেনার লক্ষ্যে চালু করা হয়েছিল হাটটি। প্রথমে দুই দেশের ৫০টি দোকান দিয়ে শুরু হলেও পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে দুই দেশের ১০০টি দোকান চালু করা হয়। প্রায় ছয় বছর চালু থাকার পর বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনার কারণে ২০২০ সালের মার্চ মাসে দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় হাটটি অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন পরিচালনা কমিটি। এ নিয়ে কয়েক দফা সভাও হয়। গত ২৯ জুলাই হাটটি পুনরায় চালু হওয়ার কথা ছিল। আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর থমকে যায় হাট চালুর বিষয়টি। সপ্তাহে রোববার বসত এ হাট।

হাটের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, হাট পুনরায় চালু হলে ভারতীয় ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের কাছে বকেয়া টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কসমেটিকস, কাপড়, ক্রোকারিজ, লোহার তৈরি সামগ্রীসহ অনেক দোকান ছিল এ হাটে। ভালোই চলছিলেন তারা।

এদিকে, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় হাটের দোকানঘরের অবকাঠামো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সম্প্রতি সেগুলো সংস্কার করে হাট ব্যবস্থাপনা কমিটি। তবে এখন পর্যন্ত হাট খুলে না দেওয়ায় অসন্তোষ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের অনেকেরই চরম অর্থকষ্টে দিন কাটছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের অনেকেরই ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারিতে বিক্রি করা পণ্যের মূল্য পাওনা রয়েছে-যা হাট না খোলায় আদায় করা যাচ্ছে না।

কসবা সীমান্ত হাটের ব্যবসায়ী লিটন কর্মকার জানান, তিনি লৌহজাত, তামা এবং কাঁসার তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্র বিক্রি করতেন হাটে। হাট বন্ধ হওয়ার আগে অনেক টাকার মালামাল অবিক্রীত রয়ে যায়। পরে সেগুলো কম মূল্যে বিক্রি করতে গিয়ে বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হয়েছে এবং তিনি ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে তিন লাখ টাকার মতো বকেয়া পাবেন।

হাটের আরেক ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া জানান, প্রতি হাটবারে তিনি অন্তত ৫০ হাজার টাকার বিভিন্ন ফল বিক্রি করতেন। ভারতীয় ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশি ফলের চাহিদা বেশি ছিল। ফলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও তার কাছ থেকে ফল কিনে নিয়ে যেতেন। হাট বন্ধের কারণে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে ফল বিক্রি বাবদ পাওনা প্রায় ৫ লাখ টাকা আদায় করতে পারছেন না বলে জানান তিনি।

হাটের আরেকজন ব্যবসায়ী আজহারুল হক জানান, হাটটি খোলার বিষয়ে বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও খুলে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ আমার প্রায় ৬০ লাখ টাকা কসমেটিকস বাবদ ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বাকি পড়ে আছে। দেশের অন্য সীমান্ত হাটগুলো চালু করে দেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। দীর্ঘদিন ধরে হাট বন্ধ থাকায় অর্থকষ্টে মানবেতর দিন দিন কাটছে।

হাট পরিচালনা কমিটির বাংলাদেশ অংশের সভাপতি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মাহমুদা আক্তার জানান, গত বছরের ২৯ জুলাই হাট চালুর কথা থাকলেও ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের কারণে পরের পরিস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর