কিশোরী কল্পনার শরীরের বিভিন্ন জায়গা গরম পানি দিয়ে ঝলসানো। উপড়ে ফেলা হয়েছে তিনটি দাঁত। এ ছাড়াও চুল স্ট্রেইট করার যন্ত্র দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শরীরের নানা অংশ। গত বছরের ১৯ অক্টোবর বসুন্ধরার একটি বাসা থেকে বেসরকারি চ্যানেল ৭১ টেলিভিশনের সাংবাদিক ইশতিয়াক ইমনের মাধ্যমে একটি বাসা থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় কল্পনাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
সারা শরীরে নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে ঢাকা মেডিক্যালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে দীর্ঘ তিন মাসেরও বেশি সময় ভর্তি ছিল ১৩ বছরের কিশোরী কল্পনা। এবার তাকে নিয়ে পাওয়া গেল দারুণ সুখবর। সেই গুরুতর আহত কিশোরী কল্পনা দীর্ঘ তিন মাস ১০ দিন ঢাকা মেডিক্যালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা শেষে এখন বাড়ির পথে। প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে পুরোপুরি সুস্থ সে।
সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, চিকিৎসক হিসেবে রোগীর হাসিমুখ দেখার চেয়ে বড় প্রাপ্তি কিছু নেই। কল্পনার কথা হয়তো আপনারা অনেকেই ভুলে গেছেন! দীর্ঘ তিন মাস ১০ দিন ঢাকা মেডিকেলের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা শেষে ওর এখন বাড়ি যাওয়ার সময় হয়েছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এক ছোট্ট গৃহকর্মী কল্পনা অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বন্দি অবস্থায় ছিল দীর্ঘদিন। ৭১ টিভির সাহসী সাংবাদিক ইশতিয়াক ইমনের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় সে মুক্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য আসে। তার ছোট্ট শরীরে অসংখ্য নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে প্রায় মৃত্যুর মুখে পড়ে। চিকিৎসা শেষে ও আজ সুস্থ। এ দীর্ঘ পরিক্রমায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিচালকসহ সবার আন্তরিক সহযোগিতা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি। সবশেষে ইমনের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।
নির্যাতনে কল্পনার ওপরের পাটির সামনের চারটি দাঁত ভেঙে গেছে। হাতসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধর ও ছ্যাঁকার ক্ষত। একদিকে মারধর, অন্যদিকে রক্তশূন্যতা। শারীরিক সমস্যার সঙ্গে আছে মানসিক ট্রমাও।
তখন নির্যাতনের শিকার কিশোরী গৃহকর্মী কল্পনা গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘আমাকে ঠিকমতো খাবার খেতে দেওয়া হতো না। সারা দিনে মাত্র একবেলা খাবার দেয়। আর সব সময় মারধর করে। বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগও করতে দেয় না।’