সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০২:৪০ পূর্বাহ্ন

৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া প্রার্থীদের নিয়ে সারজিসের স্ট্যাটাস

প্রতিবেদকের নাম
  • প্রকাশের সময়ঃ শনিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩৫ বার পঠিত হয়েছে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। ছবি : সংগৃহীত

এবার ৪৩তম বিসিএস ভেরিফিকেশনে বাদ পড়া প্রার্থীদের নিয়ে মুখ খুললেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।

শনিবার (০৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি।

ফেসবুকে সারজিস আলম লেখেন, ‘৪৩তম BCS এর পুনরায় ভেরিফিকেশন হয়েছে । ১৬৮ জনকে এই ধাপে বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ভেরিফিকেশন মিলে মোট বাদ পড়েছে ২৬৭ জন ।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখানো হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার নেগেটিভ রিপোর্ট । অর্থাৎ পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড। কিন্তু এখানে অনেকগুলো প্রশ্ন আছে।’

৪৩তম BCS এর পুনরায় ভেরিফিকেশন হয়েছে। ১৬৮ জনকে এই ধাপে বাদ দেওয়া হয়েছে। ১ম ও ২য় ভেরিফিকেশন মিলে মোট বাদ পড়েছে ২৬৭ জন।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখানো হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার নেগেটিভ রিপোর্ট। অর্থাৎ পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড। কিন্তু এখানে অনেকগুলো প্রশ্ন আছে।

আওয়ামী লীগের সময়ে আওয়ামী লীগ পরিবার ব্যতীত অন্যান্য পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা যে কারো জন্য এই প্রথম শ্রেণির সরকারি ভালো চাকরি পাওয়া কঠিন বিষয় ছিল।

একই ধরনের একটি চিত্র যদি এখন দেখা যায় তাহলে পার্থক্যটা কোথায়? যে চাকরিপ্রার্থী সে যদি নিজ যোগ্যতায় প্রিলিমিনারি, রিটেন, ভাইভা পাস করে সুপারিশপ্রাপ্ত হয় এবং তার যদি পূর্বে কোনো অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততা না থাকে তাহলে তার বাবা, চাচা, মামা, নানার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তাকে চাকরি থেকে বঞ্চিত করা হবে কেন?

আমি কি করব সেটা কি আমার চাচা নির্ধারণ করতে পারে? কিংবা আমার চাচা কি করবে সেটা কি আমি নির্ধারণ করতে পারি?

একটা সময় পরে সবাইকে ব্যক্তিগত জীবন গোছাতে হয়। ইভেন আমার বাবার রাজনৈতিক মতাদর্শের সাথে আমার চিন্তাভাবনার মিল নাও থাকতে পারে। তাহলে পরিবারের কোনো একজন সদস্যের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডের কারনে অন্য একজন সদস্যকে বঞ্চিত করার অধিকার রাষ্ট্র পায় কিনা?

সবচেয়ে বাজে ব্যাপারটা এবার হয়েছে- গোয়েন্দা সংস্থার অনেকে গিয়ে এবার ইউনিয়ন আর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সেক্রেটারির কাছে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীদের পরিবারের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা জানতে চেয়েছে !

তার মানে সারাজীবন অধ্যবসায় করা বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েট এক মেধাবী তরুণ প্রায় ৩ বছর দিনরাত এক করে পড়াশোনা করার পর প্রিলি রিটেন ভাইভা পাস করে ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পর কোন এক ওয়ার্ড সভাপতি সেক্রেটারির মতামতের কাছে জিম্মি হয়ে যাবে? সে তার কর্ম নির্ধারণ করবে?

তাহলে এত আয়োজনের কি দরকার ছিল? এই ভেরিফিকেশন তো তাহলে প্রিলির আগে হয়ে যাওয়া উচিত। তাহলে তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো নষ্ট হতো না।

আর কোন যোগ্যতা ভিত্তিতে সে এই মতামত দেয়? স্থানীয়ভাবে এমনিতেই নেতিবাচক একটা পলিটিকস দেখা যায়, কে কারে ল্যাং মেরে উঠতে পারে ! যদি একজন চাকরিপ্রত্যাশী এমন স্থানীয় পলিটিকসের স্বীকার হয় তাহলে সে দায় সরকার নিবে কিনা?

আমার অমর একুশে হলের জাকারিয়া ভাই অ্যাডমিন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিল। কি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি ! ডিপার্টমেন্ট ফার্স্ট, MS এ CGPA 4.00 out of 4.00 ! ১ম ভেরিফিকেশন উতরে গেলেও রি-ভেরিফিকেশনে বাদ দেওয়া হয় ! যারা উনাকে চেনেন তাদের সবার আকাশ থেকে পড়ার মতো অবস্থা ! আমি ভেবেছিলাম আওয়ামী আমলে উনাকে আটকানো হতে পারে ! কারণ উনার দাড়ি আছে, নুরানী চেহারা, ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। জামায়াত-শিবির ট্যাগ দেওয়া সহজ। কিন্তু উনাকে আটকানো হলো এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে ! কিন্তু এখন তো নিয়োগের ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড প্রক্রিয়া নতুন করে সেট হওয়ার কথা ছিল !

এটা শুধু একটা এক্সামপল, এমন আরো অনেকজনের সাথে কথা হয়েছে।

পরে দেখলাম যারা বাদ পড়েছে তাদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নতুন করে আবেদন করার সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু এই ভেরিফিকেশন খেলা কেন? এখানে অনেকেই আছে যারা পূর্বের চাকরি ছেড়ে এসেছে, অনেকের ছিল জীবনের শেষ চাকরির পরীক্ষা, অনেকের সামনের জীবন নির্ভর করছে এই চাকরির ওপর।

সেখানে যদি এমন রিয়েলিটি সেট করা হয় তবে যে প্রজন্ম আগামীর চাকরিপ্রার্থী তারা আপনাদের ওপর আস্থা রাখতে পারবে না, দোদুল্যমান অবস্থায় না থেকে দেশ ছেড়ে চলে যাবে। অলরেডি এটা নিয়ে কথা শুরু হয়েছে ৷ যেটা কখনোই কাম্য নয়। চাকরি হবে মেধার ভিত্তিতে। যে মতাদর্শেরই হোক না কেন, যদি পূর্বে ক্ষমতার অপব্যবহার, অন্যায়, অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততা না থাকে তাহলে নাগরিক হিসেবে সরকারি চাকরি পাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার। কোনো অহেতুক এক্সকিউজে যেটা ক্ষুণ্ন করা কখনোই ভালো বার্তা বহন করে না।

এই নিউজটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও খবর