কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফট্যানেন্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় দেশটির বিপ্লবী গোষ্ঠীর পাশাপাশি জান্তা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে সীমান্ত ঘুরে টেকনাফের দমদমিয়া নাফ নদে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন জেটি ঘাটে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য মন্তব্য করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে একজন গ্রহণযোগ্য ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি ড. খলিলুর রহমানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি সার্বক্ষণিকভাবে নজর রাখছেন। সীমান্ত এলাকায় আমাদের কোনো সমস্যা নেই। বিজিবিসহ সকল বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে যেন আইনশৃঙ্খলা সবসময় স্বাভাবিক থাকে তার জন্য গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে তিনি দুপুরের হেলিকপ্টারযোগে টেকনাফের বিজিবি ২ নম্বর ব্যাটালিয়ন সদরে অবতরণ করেন। সেখানে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা ও পরিদর্শন শেষে তিনি দমদমিয়া নাফ নদীর মোহনায় যান। নাফনদীর মোহনায় দাঁড়িয়ে সীমান্তের ওপারে দেখেন এবং বিজিবিসহ বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, টেকনাফ এবং টেকনাফের বদি মাদকের জন্য বিখ্যাত। এখানে মাদকের সমস্যা দীর্ঘদিনের। নাফনদীর বাংলাদেশের অংশের জালিয়ারদিয়া চরে কিছু অপরাধী ছিল। যারা দীর্ঘদিন ধরে মাদকপাচারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করত। বর্তমান সরকার আসার পর চর থেকে তাদের বিতাড়িত করা হয়েছে। মাদক পর্যায়ক্রমে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। এর জন্য সীমান্তের সকল মানুষকে তথ্য প্রদান করে সহযোগিতার আহ্বান জানাই। মাদক নিয়ন্ত্রণে মসজিদের মাওলানাদের জুমার নামাজসহ বিভিন্ন সময় সচেতনতার প্রচারের অনুরোধও জানান তিনি।
নাফনদীতে মাছ ধরা ও গরু আমদানির করিডোর চালু বিষয়ে মিয়ানমারের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে বলে জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন সময় গোলাগুলির শব্দ এপারে শোনা যায়। গোলা বারুদও এপারে এসে পড়ে। ফলে নাফনদীতে মাছ ধরা এখন নিরাপদ না। পরিস্থিতির উন্নত হলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গরু আমদানি বন্ধ থাকায় দেশের খামারিরা খুশি এবং পশু সংকটও নেই। পরিস্থিতির উন্নত হলে উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই করিডরের ব্যাপারে বলা যাবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পরে বিজিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর টেকনাফের কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্ট পরিদর্শন করে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ছিদ্দিকী।