বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, আওয়ামী লীগ উন্নয়নের মিথ্যা গালগল্প শুনিয়ে লাখ লাখ কোটি টাকা লুটপাট করেছে। কৃষক-শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরে নিজেদের ভাগ্য গড়েছে, আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার বিলডোরা ইউনিয়ন কৃষক দলের উদ্যোগে আয়োজিত কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে রবিশস্য বীজ বিতরণ করেন।
সমাবেশে এমরান সালেহ প্রিন্স গত বন্যায় বিলডোরা ইউনিয়নে বিএনপির ত্রাণ কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে বলেন, স্বয়ং তারেক রহমান পত্রিকায় বিলডোরা গ্রামে বন্যায় অসহায় মানুষের কথা জেনে আমাদের পাঠিয়েছিলেন সহায়তা করার জন্য। তারেক রহমান সব দিকেই খেয়াল রাখেন। সুদূর লন্ডনে নির্বাসনে থেকেও বিলডোরা গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কষ্ট তারেক রহমানের দৃষ্টি এড়ায়নি। তিনি চারন নেতায় পরিণত হয়েছেন।
এ ছাড়া তিনি বলেন, অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রজেক্টের নামে আওয়ামী নেতারা মেগা দুর্নীতি করেছেন। চট্টগ্রামে শেখ হাসিনা তার বাবার নামে অপ্রয়োজনীয় টানেল করে নিজের জন্য কোটি কোটি টাকা অপচয় করে সাত তারকা অতিথিশালা নির্মাণ করেছিলেন। অথচ দুর্দশাগ্রস্ত কৃষকের জন্য ঋণ মওকুফ করতে পারেননি, বিনামূল্যে সার দেওয়ার অঙ্গীকার করেও দেননি, কৃষকের পণ্যের ন্যাযমূল্য দেননি। তার মতো মিথ্যাবাদী, প্রতারক, ঠকবাজ, অভিনেতা, নিষ্ঠুর ফ্যাসিস্ট রাজনীতিবিদ খুঁজে পাওয়া যাবে না।
তিনি আরও বলেন, আল্লাহ বাড়াবাড়ি পছন্দ করেন না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার নেশায় হত্যা, গুম করে নরকের দেশে পরিণত করেছিল।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হাস্যোজ্জ্বল আলাপচারিতার কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ক্ষমতার দম্ভে হাসিনা এক সময় ড. ইউনূস ও খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে নদীতে ফেলে মারতে চেয়েছিল। আল্লাহর বিচার, আজ ড. ইউনূস এবং বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে হাস্যোজ্জ্বল আলাপচারিতায় আর হাসিনা গণহত্যা করে নিকৃষ্ট ফ্যাসিস্ট পরিচয় ধারণ করে প্রভুর দেশে পলাতক। আল্লাহ যাকে সম্মান দেন, কেউ তা কেড়ে নিতে পারে না।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ,তারেক রহমান এবং বিএনপি কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তারেক রহমান একজন কৃষকবান্ধব নেতা। সবসময়ই তিনি কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে কাজ করেন। জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে তিনি কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে করণীয় বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করছেন।
পাশাপাশি তিনি বলেন, সম্প্রতি বন্যায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, সরকারের কাছ থেকে সময়মতো প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তিনি বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটাতে পুরোনো কৃষি ঋণ মওকুফ, সুদমুক্ত নতুন কৃষি ঋণ প্রদান, বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক, তেল প্রদান, এনজিও ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ , ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পুনর্নির্মাণসহ কৃষি পুনর্বাসনের দাবি জানান।
হালুয়াঘাট উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আবু হাসনাত বদরুল কবির, আলমগীর আলম বিপ্লব, সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান, আবদুল হাই, মোনায়েম হোসেন খান খোকন, শহীদুল হক খান সুজন, জেলা যুবদলের সহসভাপতি আবদুল আজিজ খান, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা হোসনে আরা নীলু, বিভাগীয় শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল গণি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন খান, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এমআর আল আমিন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান দুলাল, যুগ্ম আহ্বায়ক প্রভাষক খালেদুজ্জামান আউলিয়া, উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান, স্থানীয় নেতা লাট মিয়া আকন্দ, আবুল কালাম, তোফাজ্জল হোসেন, কছিম উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, আবদুল মালেক প্রমুখ।