রাতে শালিশ শেষে বাড়ি ফিরে গভীর রাতে গৃহবূধুর আত্মহত্যা
রুবেল চিরিরব বন্দর দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে চেয়ারম্যান কার্যলয়ে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে দু পক্ষের শালিশ শেষে গভীর রাতে গ্যাস ট্যাবল্যাট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে লাভলী বেগম (৩১) নামে এক গৃহবূধূ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের কালিতলা গ্রামের মহির মেম্বার পাড়ায়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, দুই সন্তানের জননী লাভলী বেগমের স্বামী জামিনুল ইসলাম সংসারে অভাব থাকার কারনে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করে আসছে ।
এই সুযোগে স্ত্রী লাভলী বেগম একই উপজেলার পাশ্ববর্তী তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সিঙ্গানগর গ্রামের তার বাবার বাড়ি এলাকার নিরঞ্জন রায় নামে এক ছেলের সাথে পরকিয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে দুজনেই একে অপরকে দেখা করতে রোববার (২০ আগষ্ট) রাতে নিরঞ্জন রায় লাভলীর বাসায় ঢুকলে দু’জনকে আটক করে এলাকাবাসী।
এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গ্রাম পুলিশ কার্তিক চন্দ্র রায়ের সহযোগিতায় ৯ ও ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খিতিষ চন্দ্র রায় ও আব্দুল সামাদ সেখানে উপস্থিত হয়ে নিরঞ্জন রায়ের পরিবারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা দাবী করে তা আদায় করে নেয়। পরে দুজনকে নশরতপুর ইউপি চেয়ারম্যান কার্যালয়ে হস্তান্তর করে।
পরে তাদেরকে ইউনিয়ন কার্যলয়ে নিয়ে আসলে চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব বিএসসি এ ঘটনায় ছেলে পক্ষের কাছ থেকে মেয়েকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১ লক্ষ টাকা দিয়ে তাদের দুজনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
পরে রাত অনুমানিক ২টার দিকে বাড়িতে ফিরে লাভলী বেগম লজ্জায় গ্যাস ট্যাবল্যাট খেয়ে বিষপানে আত্নহত্যার চেষ্টা করলে পরিবারের লোকজন টেরপেয়ে চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে-এ নিয়ে যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে লাভলী বেগমের মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার ব্যাপারে জানাতে চাইলে তারা জানায় চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে শালিশের কারনে মfনসম্মানে ক্ষতি হওয়ায় লাভলী বেগমের। মানসিক ভাবে সেটি সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যা করে।
নশরতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব বিএসসি বলেন, আমি শালিশের মাধ্যমে দু পক্ষকে বসিয়ে ছেলে পক্ষের কাছ থেকে মেয়ে পক্ষকে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে দিয়েছি। তবে মেম্বার ও গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে যে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তা সম্পকে আমি কিছু জানিনা।
চিরিরবন্দর থানার (ওসি) মো: বজলুর রশিদ আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে একটি ইউডি মামলা হয়েছে। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। লাশ ময়না তদন্তের পর পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে কোন অভিযোগ পেলে আইননুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।